গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৪

অদিতি ভট্টাচার্য


ফুল

আজকাল বেশ চিন্তা হয় সুপ্তির। মানুষটা দিন কে দিন যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে। কই, আগে তো এ রকম ছিল না। কী রকম যেন খিটখিটে, সবেতেই বিরক্তি। বোঝেন সুপ্তি, একাকীত্ব, রিক্ততা সব যেন গ্রাস করেছে নির্মলকে। সুপ্তি যতটা পারেন সঙ্গ দেন, এই বয়সে দুজনই তো দুজনের অবলম্বন। কিন্তু তার বাইরে মেলামেশার গণ্ডীটা যেন ক্রমশ ছোটো হয়ে যাচ্ছে। আন্তরিকতা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, একটা দুটো কথার পর কী রকম যেন কথা ফুরিয়ে যায়। চারপাশে এত লোক, এত কোলাহল, অথচ তার মাঝেও নিঃসঙ্গতায় ভোগে মানুষ।

        না, নির্মলকে নেহাতই খাওয়াদাওয়া, খবরের কাগজ পড়ে আর টিভির সামনে বসে থাকে ঝিমিয়ে পড়া বৃদ্ধ ভাবলে একেবারেই ভুল ভাবা হবে। তা সে অফিস যাওয়ার দৈনন্দিন রুটিন থেমে যাওয়ার পর যতই অবসর থাকুক না কেন। নির্মল এই বয়েসেও যথেষ্ট অ্যাক্টিভ। নিয়মিত বাজার দোকান করেন। তাছাড়া বাগানের শখ তো আছেই। হ্যাঁ, ছোটো ছোটো চারাগাছ কিনে এনে পরম যত্নে তাদের মাটিতে রোপণ করে মায়া মমতায় সিঞ্চিত করে বড়ো করে ফুল ফল ধরানো নির্মলের কাছে এক পরিতৃপ্তির কাজ। শুধু কি জল ঢাললে আর সার দিলেই হয়? যত্ন, ভালোবাসা লাগে। একটু একটু করে যখন চারাগাছগুলো বড়ো হয় তখন অনুভব করা যায় তাদের সঙ্গে মনের বন্ধন। ফুলে ফুলে যখন বাগানটা ভরে যায়, নির্মলের বুকটাও ভরে ওঠে আনন্দে। একটা ফুল নষ্ট হলে বা ছিঁড়লে ঠিক তেমনই ব্যথায় দুমড়ে মুচড়ে ওঠে মন।

        সম্প্রতি এই বেদনাই বড়ো বেশী বিদ্ধ করছে নির্মলকে। ভোরে এসে কে বা কারা যেন ফুল তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে। শুধু ফুল নয়, ধরা পড়ার ভয়ে অতি দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার তাড়ায় নির্মম নিষ্ঠুর হাতে গাছও নষ্ট করছে। রোজই সকালে দেখেন নির্মল আজ এ গাছের ডাল ভাঙা তো কাল অন্য আরেকটার সব ফুল মুড়িয়ে নিয়ে গেছে। ফুলশুন্য গাছগুলোর বিধ্বস্ত চেহারা যেন নির্মলের বুকে ধাক্কা মারে। কি করবেন, অত ভোরে উঠতে পারেন না। শীতকালে ছ’টা অবধি তো প্রায় অন্ধকারই থাকে। গত বছর শীতে ঠাণ্ডা লেগে খুব ভুগেছিলেন। এবার সুপ্তি তাই সাড়ে ছ’টা সাতটার আগে কিছুতেই বাইরে বেরোতে দেন না। আর এই সুযোগে ফুলগুলো সব চুরি হয়ে যাচ্ছে।

        এখানে প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই বাগান, পুজোর ফুলের জোগান পাওয়া মোটেই সমস্যা নয়, তাও যে কেন লোকে অন্যের বাড়ি থেকে ফুল চুরি করে নির্মলের মাথায় ঢোকে না। তাঁর বাড়িতে রোজকার পুজোর ফুলের জন্যে নির্দিষ্ট কিছু গাছ আছে যেমন জবা, বেলি, টগর, কুন্দ ইত্যাদি। এগুলো ছাড়া আর কোনো ফুল তোলা যায় না। এমন কী পিউ আর বিট্টু বলে যে পুঁচকে পুঁচকে দুটো ছেলেমেয়ে নির্মলদের আউটহাউসে থাকে, তাদেরও খেলতে হয় খুব সাবধানে। একবার বিট্টুর বল অ্যাস্টারের বেডের মধ্যে চলে যাওয়াতে নির্মল বেশ বিরক্তই হয়েছিলেন। পিউ আর বিট্টু তারপর থেকে দাদুকে ভালোই ভয় পায়, বিট্টু তো সামনেই আসতে চায় না পারতপক্ষে। কতটুকুই বা বয়স, বড়োজোর বছর তিন। দিদার সঙ্গে অবশ্য ওদের খুব ভাব, দিদাকে তাই ভয়ও পায় না।

        সেদিনও নির্মল বাগানে এসে দেখলেন সামনের ক’টা গাঁদা গাছ একেবারে শূন্য। শুধু তাই নয়, একটা গাছের মাথাও মুচড়ে ভাঙা। সুপ্তি পাশেই ছিলেন।
        “সকালে সমর ছোটো গেটটার তালা খুলে বেরোয়, আর তালা লাগায় না। ওই গেটটা দিয়েই ঢুকে সব ফুল নিয়ে যাচ্ছে,” নির্মল বললেন সুপ্তিকে।
        “কী করবে? একবার কোন ভোরে যায় বাচ্ছাদের দুধ আনতে। ফিরে আবার কারখানায় বেরোয়। এই ঠান্ডায় বারবার কে এসে তালা লাগাবে আর খুলবে। প্রতিমা ঘরে কাজ করে,” বললেন সুপ্তি।

        সমর আর প্রতিমা পিউদের বাবা, মা। ক’বছর হল মির্মলদের আউটহাউসে আছে। সমর কারখানায় কাজ করে, ভোরে বেরিয়ে যায়। প্রতিমা ঘরের কাজের ফাঁকে ফাঁকে সেলাই করে। দুটো বাচ্ছাকে মানুষ করার জন্যে দুজন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। নির্মল লক্ষ্য করেছেন ওদের মানসিকতা, একটা ভালো পরিবেশে রেখে বাচ্ছাদুটোকে ভালোভাবে বড়ো করার আকুতি। কোনো ঝুটঝামেলা নেই, দিনের শেষে নেশা করে বাড়িতে ফিরে চিৎকার চেঁচামিচি নেই। নির্মলদের তাই ভালোই লাগে ওদের।

        “দেখো বলে প্রতিমাকে যদি তালা লাগিয়ে রাখতে পারে,” বলে নির্মল ভেতরে ঢুকে গেলেন।
        চলে তো গেলেন কিন্তু কি রকম যেন গুম হয়ে রইলেন। চা, জলখাবার খেলেন, খবরের কাগজটাও মুখের সামনে খুলে বসলেন, কিন্তু মন যে ঠিক নেই সুপ্তি ভালোই বুঝতে পারছেন। নির্মলও কী আর বুঝছেন না, তাই বোধহয় মন খারাপ কাটাবার জন্যেই কিছুক্ষণ পরে বললেন, “যাই, দোকানে ঘুরে আসি। তোমার কী সব যেন লাগবে বলছিলে না কাল রাত্তিরে? ফেরার পথে চৌধুরীবাবুর বাড়িতেও একটু ঢুঁ মেরে আসব। অনেক গাছ লাগিয়েছিলেন, দেখি কী রকম ফুল হল। অনেক দিন ওদিকে যাওয়া হয় নি।”

        সুপ্তির কাছে জিনিসের ফর্দ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। সুপ্তিও একটু নিশ্চিন্ত হলেন। যাক, একটু ঘুরে বেড়িয়ে এলে, লোকের সঙ্গে দুটো কথা বললে মনটা হালকা হবে।
        কিন্তু মানুষ যা ভাবে, যা আশা করে, তা কি সব সময় হয়? হয় না। বরং অনেক সময় তার উল্টোটাই হয়। নির্মল যখন ফিরলেন, মুখ বেশ গম্ভীর।
        “কী গো কী হল? গেলে চৌধুরীবাবুদের বাড়ি?” সুপ্তি জিজ্ঞেস করলেন।
        “হুঁ। কিন্তু না গেলেই বোধহয় ভালো হত।”
        “কেন? কী হল?”
        নির্মল চুপ।
        সুপ্তি আবার জিজ্ঞেস করলেন, “কী গো, বলবে তো কী হল।”
        “চৌধুরীবাবুর বাড়িতে গিয়ে দেখি বাগান একেবারে তছনছ। বেশীরভাগ গাছই নেই, যে ক’টা আছে তাদেরও হাল খারাপ। জিজ্ঞেস করতে বললেন, নাতি করেছে,” বললেন নির্মল।
        “নাতি করেছে?” সুপ্তি অবাক, “ওনারা যে বলেন সব সময় নাতি নাকি দারুণ বাধ্য ছেলে, খুব ডিসিপ্লিনড, কী যেন স্কুলটার নাম, ভুলে যাচ্ছি………. সেখানে পড়ে, ওখানে নাকি ডিসিপ্লিন খুব কড়া। তাছাড়া ওনাদের ছেলে বউমারও সব দিকে নজর। তাহলে?”
        “তোমার মতো অবাক আমিও হয়েছিলেম। সেটা বুঝেই বোধহয় চৌধুরীবাবু বললেন, ‘স্কুলে অতক্ষণ আটকে থাকে। বাড়িতেও যদি দুষ্টুমি না করে তো কোথায় করবে? জিনিসপত্র ভাঙা, গাছটাছ নষ্ট করা – এসব তো স্বাভাবিক। ওরাই তো করবে এসব।’ আমি আরো অবাক হয়েছিলাম শুনে। তাই চৌধুরীবাবু বললেন, ‘ওসব আপনি বুঝবেন না মশাই। বাড়িতে বাচ্ছাকাচ্ছা নেই তো কোনদিন।’ ঠিকই বলেছেন, ছেলেপিলে কাকে বলে তাই জানলাম না, নাতি নাতনির মর্ম কী করে বুঝব!”

        সুপ্তির চোখ ভিজে হয়ে এল। নির্মলের শেষ ক’টা কথা যেন বুকে শেল হানে। এ নতুন নয়, অনেকবার শুনেছেন দুজনে এসব কথা। কিন্তু তাও যতবার শোনেন ততবারই রক্তক্ষরণ হয়। কোনো বাচ্ছার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করলেই, “আহারে, নিজের তো আর হল না, পরের বাচ্ছার ওপরেরি কত টান,” – কত শুনেছেন এও! না, সবাই যে সামনাসামনি বলেছে তা নয়, কিন্তু ঘুরপথে কানে ঠিকই এসেছে। এসব কথা কানে তোলার উৎসাহী লোকের অভাব এ সংসারে কোনোদিনই হয় না, হবেও না। এখন তো পরিচিতজনেদের সঙ্গে আলাপচারিতা মানেই একটা দুটো কথার পরেই নিজেদের ছেলে, মেয়ে জামাই, বৌমা, নাতি, নাতনির কৃতিত্বের কথা গর্বের সঙ্গে বলা। একসঙ্গে কয়েকজন হলে তো এর ওকে টেক্কা দেবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। ওনাদের দুজনের নীরব শ্রোতার ভূমিকা নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। হয়তো এ স্বাভাবিক, সন্তান গর্বে গর্বিত পিতামাতার স্বাভাবিক উচ্ছ্বাস। কিন্তু বড়ো বেশী উচ্চকিত কি নয়? কে জানে! আবার ওনাদের এই নীরবতা অনেকের অযাচিত সহানুভূতির জন্ম দেয়। এ কী ওনাদের ধৈর্য, সহিষ্ণুতার অভাব নাকি অপরের সংবেদনশীলতার? বোঝেন না সুপ্তি, বুঝতে পারেন না। সমাজ এগোচ্ছে না পেছোচ্ছে – এসব কিছুই বোঝেন না, শুধু বোঝেন যে বেচারা, হতভাগ্যের তকমা কপালে নিয়েই দুজন প্রায় সারা জীবন কাটিয়ে দিলেন, কোথায় যেন পিছিয়ে, অন্যদের ঠিক সমকক্ষ না হয়েই।

        সেদিন সারাটা রাত প্রায় ছটফট করেই কাটালেন নির্মল। পাশে নিদ্রাহীন সুপ্তিও। ভোরে চোখদুটো লেগে এসেছিল, হঠাৎ একটা চিৎকারে ঘুম ভেঙে গেল। এটো একেবারে কচি গলার চিৎকার! এতো ভোরে বাচ্ছার চিৎকার!

        “পিউ! এতো পিউ-এর গলা! কী হল পিউ-এর?” সুপ্তি শশব্যস্তে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়েন।
        কোনো রকম গায়ে চাদরটা জড়িয়ে ছুটলেন সদর দরজার দিকে। সঙ্গে নির্মলও। বেরিয়ে যা দৃশ্য দেখলেন তা কল্পনারও অতীত।
        বিট্টু তার ছোটো ছোটো দু হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আছে, যেন ওই ছোট্ট শরীরের সব সামর্থ্য দিয়ে কাউকে আটকানোর প্রাণপণ চেষ্টা। আর পিউ?
        পিউ বলছে, “কেন তুমি রোজ রোজ ফুল তুলে নিয়ে যাও? গাছ ভেঙে দাও? দাদুর কত কষ্ট হয় জানো? দাদু সারাদিন বাগান করে। তুমি এরকম করে সব নষ্ট করো বলে দাদুর খুব মন খারাপ হয়। গাছ নষ্ট করতে নেই, সব ফুল তুলে নিতে নেই, দাদু বলেছে। কেন এরকম করো তুমি?”

        বলছে কাকে এসব কথা পিউ? ফুল তুলে, গাছ নষ্ট করে যাওয়া যে এনার কীর্তি তা স্বপ্নেও ভাবেন নি নির্মল, সুপ্তি। চৌধুরীবাবু। তাঁর তখন প্রায় মাটিতে মিশে যাবার অবস্থা। একটা কারখানা মজুরের দুটো বাচ্ছা বাচ্ছা ছেলেমেয়ে যে তাঁকে আটকাতে পারে তা তিনি কখনোই ভাবতে পারেন নি। আবার মেয়েটার তারস্বরে চেঁচানি শুনে নির্মলরাও বেরিয়ে এসেছেন।

        কেউই কোনো কথা বলতে পারছে না। নির্মল একটু হাসলেন শুধু। বিস্ময় না উপহাস – কী ছিল সেই হাসিতে বলা শক্ত। চৌধুরীবাবু প্লাস্টিকের প্যাকেট হাতে পালিয়ে বাঁচলেন।
        ততক্ষণে আঁচলে হাত মুছতে মুছতে প্রতিমাও এসে হাজির।
        “বাচ্ছা্দুটো এই ঠাণ্ডায় বাইরে বেরিয়ে পড়েছে, তোর খেয়াল নেই। দরজা বন্ধ রাখিস না কেন?” সুপ্তি বকেন প্রতিমাকে।
        “বাথরুমে গেছিলাম। ওদের বাবা বেরিয়ে গেছে, দরজাটা তাই খোলা ছিল। কী করেছে কাকীমা? অসভ্যতা করেছে কিছু? আমি দেখছি। এই পিউ……

        নির্মল হাত তুলে থামান প্রতিমাকে। তিনি একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন ওদের দিকে। ওরাও এবার আড়ষ্ট। দাদু বেরিয়ে এসেছে যে! যদি বকে! কিন্তু ফুলগাছ নষ্ট করা তো দাদু একদম পছন্দ করে না, তাহলে? ওরকম করে দেখছে কেন? ওদের মনও হাজার প্রশ্নে তোলপাড়। আর নির্মল দেখছেন সামনে দুটো বাচ্ছা। না স্পর্শ করেও বোঝা যায় শীতে কচি কচি আঙুলগুলো কনকনে ঠাণ্ডা, গালগুলো ফেটে লাল। তেল, ক্রীম, লোশনের মমত্বভরা আবরণ নেই যে। গায়েও নেই এই ভোরের ঠাণ্ডাকে বাগ মানাবার মতো বস্ত্র। ঘুম ঘুম চোখ, উস্কোখুস্কো চুল। মা জানেও না কখন উঠে বাইরে বেরিয়ে এসেছে। মার অত সময়ই বা কোথায়? হাজার কাজ করতে হয় তাকে।
        নির্মল কাছে ডাকেন দুটোকে। ভীরু পায়ে এগিয়ে আসে ওরা।
        “বাইরে বেরিয়েছিলি কেন এত ঠাণ্ডায়?” নির্মল জিজ্ঞেস করেন।
        চুপ দুজনে।
        “কী রে উত্তর দে, দাদু কী জিজ্ঞেস করছেন। কেন বেরিয়েছিলি বাইরে?” প্রতিমা ধমকে ওঠে।
        “রোজ ফুল চুরি হয়ে যায়, বাগানটা কী রকম বিচ্ছিরি হয়ে যায়। তাই বাবা বেরিয়ে গেলে আমরা……………” পিউ-এর গলা দিয়ে এখন আর স্বর বেরোতে চায় না।

        নির্মল অবাক হয়ে যান। এতদিন এদুটো তাজা ফুলই তাঁর নজরে পড়ে নি। জীবনে কী পেয়েছেন আর কী পান নি সে হিসেব থাক, সে হিসেব কেই বা কবে মেলাতে পেরেছে! কিন্তু আজ সামনে দাঁড়িয়ে আছে এ দুটো। এরা বুঝেছে ফুল চুরি করতে নেই, ফুলগাছ নষ্ট করতে নেই। নাই পড়ুক এরা নামকরা স্কুলে, না থাকুক এদের বংশ কৌলিণ্যের গৌরব, হোক এদের বাবা কারখানার মজুর আর মা ক্লাস এইট পাশ গৃহবধূ – এদের একটা মন আছে , যে মন বোঝে অন্যের ব্যথা, কষ্ট, ভালো মন্দের ফারাক। নির্মল জড়িয়ে ধরেন দুটোকে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেন আদর করে। সে স্নেহের পরশে ভয় সরে গিয়ে কচি কচি মুখদুটোয় ফোটে হাসি। সরল, সুন্দর হাসি। সে হাসিতে বাগানটাও যেন কী রকম আলো হয়ে যায়, এক অনাবিল আনন্দে ভরে ওঠে নির্মল, সুপ্তির মন।