গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯

সিদ্ধার্থ সিংহ


ঘুম কাতুরে

(গত সংখ্যায় প্রকাশিত অংশের পর । গল্পটির আগের অংশের লিঙ্ক -https://galpogucchho.blogspot.com/2019/09/blog-post_11.html )


তখনই তার সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছিল। মনে মনে বলেছিল, না। ঠিক করেনি। তার বিশ্বাসে আঘাত করেছে। জন্যই কি যখন তখন হুটহাট করে বেরিয়ে যাচ্ছে! রাত করে ফিরছে! তার মাইনের কোনও হিসেব পাচ্ছে না সে! কানাঘুষোয় জানতে পারছে, তার স্বামী একটু একটু করে দেশের জমিজমা বেচে দিচ্ছে! তার মানে সে যা সন্দেহ করছে সেটা সত্যি! অন্য কোনও মেয়ের পাল্লায় পড়েছে! তার পিছনেই ঢালছে সব টাকা! ছিঃ ছিঃ ছিঃ। আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। সব করার আগে কি ছেলের মুখটাও ওর একবার মনে পড়ল না! জানাজানি হলে লোকের কাছে আমি মুখ দেখাব কী করে! মা-বাবাই বা কী ভাববেন! আচ্ছা, দিন আগে কতগুলো কাগজে আমাকে দিয়ে সই করিয়েছিল না! টিক দেওয়া জায়গাগুলো দেখিয়ে বলেছিল, সই করতে। বলেছিল দেখে সে সই করে দিয়েছিল। একবার চোখ বুলিয়ে দেখারও প্রয়োজন মনে করেনি। ওগুলো কীসের কাগজ ছিল! আবার কায়দা করে ডিভোর্সের কাগজে সই করিয়ে নেয়নি তো! চার দিকে যা শুনছি, আমার তো এখন সন্দেহ হচ্ছে
না। আমি ওকে ছাড়ব না। এর একটা হেস্তনেস্ত করে ছাড়ব। ওর সত্যিই যদি কাউকে মনে ধরে থাকে, তা হলে তাকে নিয়েই থাকুক। আমার কাছে আসতে হবে না। বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে আমি। তাঁদের অবর্তমানে গোটা বাড়িটাই আমার। আর বাবার যা ফিক্সড ডিপোজিট করা আছে, সে সব তো আমিই পাব। তার সুদে আমার আর আমার ছেলের বাকি জীবনটা খুব ভাল ভাবেই চলে যাবে। দরকার নেই তাকে। ঠিক আছে, দেখি... বলেই, ফোন করেছিল তার মামাতো ভাইকে। সে থাকে পাশের পাড়ায়। ওই এলাকার বেশ হোমড়াচোমড়া। পার্টি করে। সব শুনে সে বলল, কিচ্ছু ভাবিস না, আমি তো আছি। তোকে পরে ফোন করছি।
শময়িতা জানে, এই রকমই। পরে ফোন করছি বলেছে মানে আর ফোন করবে না। নানা নক্কাছক্কা করে বেড়ায়।
কিন্তু না। তার কিছুক্ষণ পরেই সে ফোন করল। এবং শময়িতাকে কিছু বলতে না দিয়েই বলল, শোন, তুই যে ওর অফিসে ফোন করেছিলি, ওখানে তোর পরিচয় দিসনি তো?
না।
ঠিক আছে। এলেও ওকে একদম কিচ্ছু বলবি না। ওকে বুঝতেই দিবি না যে, তুই টের পেয়েছিস। বুঝেছিস? যখন কাল অফিসে বেরোবে, তার আগে তুই শুধু আমাকে একটা মিস কল করবি, বুঝেছিস? তোকে আর কিচ্ছু করতে হবে না। যা করার আমিই করব। দেখি ওর টা পাখনা গজিয়েছে...

মামাতো ভাইয়ের কথা মতোই কাজ করেছিল শময়িতা। সমস্ত যন্ত্রণা চেপে রেখে রোজকার মতোই ডাইনিং টেবিলে খাবার বেড়ে দিয়েছিল সে। হাজার চেষ্টা করেও নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারছিল না। এই লোকটাই সে? যে তাকে একদিন ভালবেসে বিয়ে করেছিল! এই- সে! বারবার চোখ চলে যাচ্ছিল শ্রয়নের চোখের দিকে।
শ্রয়ন যখন এঁঠো হাত বেসিনে ধুয়ে জামাপ্যান্ট পরার জন্য শোবার ঘরে ঢুকল, শময়িতা তখন পাশের ঘরে গিয়ে রোজকার মতো স্বামীর হাতে তুলে দেবার জন্য রুমাল, পার্স আর চশমাটা নিয়ে, না, মিস কল নয়, চুপিচুপি ফোন করে তার মামাতো ভাইকে খুব চাপা গলায় জানিয়ে দিল, এক্ষুনি বেরোচ্ছে।
শ্রয়ন বাড়ি থেকে  বেরিয়ে গলির মুখে এসে টপাটপ বোতাম টিপল মোবাইলের। তার পর দাঁড়িয়ে রইল। সামনে দিয়ে একটা বাস চলে গেল। যেটা ওর অফিসের সামনে দিয়ে যায়। কিন্তু তাতে উঠল না। ইচ্ছে করলেই একটা কেন, একসঙ্গে দু’-চার-পাঁচটা নতুন গাড়ি কিনতে পারে। কিন্তু মৃত্যুর আগে যেহেতু ওর বাবা বলে গিয়েছিলেন, দ্যাখ, আমাদের তো বাপ-ঠাকুর্দার রেখে যাওয়া টাকার সুদে সংসার চলে। সেই সুদ কিন্তু দিনকে দিন কমছে। ফলে যতটা সুদ আসছে, তার চেয়ে কম খরচ করতে হবে। কিছু কিছু করে সুদের টাকা জমিয়ে মূল টাকার সঙ্গে ফিক্সড করতে হবে। না হলে মহাবিপদ। কারণ, আমার তো মনে হয়, যে হারে সুদ কমছে, সেই দিন আর বেশি দূরে নেই, যে দিন সুদ দেওয়া তো দূরের কথা, নিরাপদে টাকা গচ্ছিত রাখছে বলে ব্যাঙ্কগুলি উল্টে টাকা চাইবে। সুতরাং এখন থেকে সতর্ক হতে হবে। খরচের বহর কমাতে হবে। এক্ষুনি রাশ টানতে না পারলে আর দেখতে হবে না
সেই কথা মাথায় রেখেই বাবার মৃত্যুর পরে খরচ কমাতে শুরু করেছিল। বাড়িতে দু’-দুটো গাড়ি থাকলেও ট্রামে বাসেই যাতায়াত করত। যখন চাকরি পেল তত দিনে গাড়ি দুটো পড়ে থেকে থেকে লড়ঝড়ে হয়ে গেছে। কেজি দরেও বিক্রি করা যাবে না। আর গাড়ি কেনেনি।
দুমিনিটও হল না, ওর সামনে একটা ওলা এসে দাঁড়াল। সেটায় উঠে পড়ল।
ট্যাক্সিটা স্টার্ট দিতেই ওর পিছু নিল একটা নয়, গলির মুখে এবং মুখে অপেক্ষা করতে থাকা দু’-দুটো ঝাক্কাস বাইক। দুটো বাইকেই চালক ছাড়াও পিছনে একজন করে ছেলে।
টিভি সেন্টারের সামনে দিয়ে এসে ট্যাক্সিটা লর্ডস বেকারির মোড় থেকে বাঁ দিকে বাঁক নিল। আনোয়ার শাহ রোড ধরে খানিকটা গিয়ে, ডান হাতের লেক গার্ডেন্সের ব্রিজে উঠল। তার পর লেকের ভিতর দিয়ে শরৎ বসু রোড হয়ে গলি গলির ভিতর দিয়ে একেবারে ভবানীপুরে। আইকোর বিল্ডিংয়ের পিছনে একটা ঝাঁ-চকচকে নতুন আটতলা বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াল। তার পর সেই বাড়িটার কারুকাজ করা বিশাল লোহার ফটক দিয়ে সোজা ঢুকে গেল ভিতরে।
এই বাড়িটার নীচেই কার পার্কিং প্লেসের সামনের বেশ খানিকটা জায়গা নিয়ে পার্টি অফিস। সকাল-সন্ধে ভিড় লেগেই থাকে। যত না পাড়ার ছেলে থাকে, তার চেয়ে বেশি থাকে অন্যান্য এলাকার ছেলেরা। এত ভিড় হয়ে যায় যে, কার পার্কিং প্লেসে আর কুলোয় না। ফুটপাতে চেয়ার বিছিয়ে বসে পড়ে। এই সকালবেলাতেই বসে রয়েছে পার্টির তিন-চার জন ছোকরা।
বাইকবাহিনীর কাছ থেকে ফোন মারফত সেই খবর পৌঁছে গেল শময়িতার মামাতো ভাইয়ের কাছে। পৌঁছতেই সে মনে মনে বলল, পেয়েছি ব্যাটাকে। পালাবে কোথায়! আমার হাত থেকে ওর আর নিস্তার নেই। ওকে একেবারে হাতেনাতে ধরব। ভেবেই, বাইকের চার জনকে ওখানে পাহাড়ায় থাকতে বলে শময়িতার বাড়ি থেকে শময়িতাকে তার সদ্য কেনা অল্টোয় তুলে সোজা হাজির হল সেখানে।
পার্টি অফিসের সামনে যে ছোকরাগুলো বসে ছিল, তাদের প্রায় সকলেই শময়িতার মামাতো ভাইকে চেনে। তাকে গাড়ি থেকে নামতে দেখেই তারা এগিয়ে গেল। উনি তখন শময়িতার মোবাইলে তোলা শ্রয়নের ছবিটা দেখিয়ে ওদের কাছে জানতে চাইল, এই লোকটাকে কি তোমরা চেনো?
ওরাচিনিবলতেই শময়িতার মামাতো ভাই বলল, এই লোকটা কি এখানে রোজই আসে?
ওদের মধ্যে থেকে একজন বলল, রোজ নয়, তবে প্রায়ই আসে। কেন বলুন তো? কোনও লাফড়া হয়েছে নাকি?
সে কথায় উত্তর না দিয়ে মামাতো ভাই উল্টে প্রশ্ন করল, কার কাছে আসে?
ওদের মধ্যে থেকে অন্য জন বলল, কার কাছে আবার? উনি ওনার নিজের ফ্ল্যাটে আসেন।
নিজের ফ্ল্যাট! চমকে উঠল শময়িতা। তার পরেই কী মনে হতে, নিজের মনেই বলল, বুঝেছি, তার মানে নতুন কোনও সংসার পেতেছে এখানে! ঠিক আছে, দেখাচ্ছি মজা
মামাতো ভাই ওদের কাছে ফের জানতে চাইল, উনি কি এখানে ফ্ল্যাট কিনেছেন নাকি ভাড়া নিয়েছেন?
না না। ভাড়া না। ভাড়া নিলে তো আমরা জানতাম। উনি কিনেছেন। তাও তো প্রায় পাঁচ-মাস হয়ে গেছে। তবে যত দূর জানি উনি রাতে থাকেন না। ওনার নাকি অন্য জায়গাতেও বাড়ি আছে।
উদ্বিঘ্ন হয়ে শময়িতা জিজ্ঞেস করল, সঙ্গে কে থাকে?
ছেলেগুলো কিছু বলতে যাবার আগেই মামাতো ভাই বলল, সে যে- থাকুক না কেন, অফিসে না গিয়ে যখন এখানে এসেছে, তখন নিশ্চয়ই সে আছে। তোমরা জানো কোন ফ্লোরে থাকে?
হ্যাঁ হ্যাঁ, ফাস্ট ফ্লোরে।
চলো তো...

ওরা যখন বাড়ির ভিতরে ঢুকে লিফটের জন্য অপেক্ষা না করেই সিঁড়ি দিয়ে তরতর করে উঠছে, তখন নিজের মনেই বিড়বিড় করতে লাগল শময়িতা, এই জন্যই কিছু দিন ধরে দেখছি, আমাকে এড়িয়ে চলছে। রাত করে বাড়ি ফিরছে। তার মানে...
দোতলায় উঠে কলিংবেল টিপছে তো টিপছেই। বারবার টেপাতেও না খোলায় মামাতো ভাইয়ের নির্দেশে ওই ছোকরাগুলো দরজা ধাক্কানো শুরু করল। শুরু করল হাঁক পেড়ে ডাকাডাকি। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ফ্ল্যাটের ফ্ল্যাটের লোকেরা দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন। জানতে চাইলেন, কী হয়েছে?
অনেকক্ষণ পরে অবশেষে যে লোকটা লুঙ্গি পরে ঘুম-জড়ানো চোখে দরজা খুলে বেরিয়ে এল, সে আর কেউ নয়, শময়িতার স্বামীশ্রয়ন। ঘুমের ঘোরেই সে জিজ্ঞ়়েস করল, কে?
শময়িতা বলল, আমি।
শময়িতার গলা শুনে যেন চারশো চল্লিশ ভোল্টের শক খেল সে। মুহূর্তে উধাও হয়ে গেল তার ঘুম। কেন? কী হয়েছে? প্রশ্ন করতে যাওয়ার আগেই প্রায় ধাক্কা মেরে শ্রয়নকে সরিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে গেল ও। ঘর ঘর সে ঘর দেখল। না। তিনটে বড়় ঘরের একটাতেও কেউ নেই। কেউ কেন, ঘরে কোনও আসবাবও নেই।
থাকার মধ্যে আছে শুধু একটা ঘরে ব়়ড় একটা আনকোরা খাট। তাতে আরও আনকোরা নরম তুলতুলে বিছানা। পলিথিনের মোড়ক অবধি খোলা হয়নি। এক পাশে গুটিয়ে রাখা তোষক। আর দুদিকে ছড়িয়ে আছে মাথায় দেওয়ার দুটো বালিশ। একটা কোল বালিশও।
খাটের নীচ-টিচ ভাল করে দেখে, কাউকে না পেয়ে দিকের করিডরে গিয়ে উঁকি মেরে শময়িতা দেখার চেষ্টা করল, কলিংবেল আর চিৎকার চেঁচামেচি শুনে কেউ দিক থেকে পালিয়েছে কি না। না। সে সুযোগ নেই। কাউকে কেন, অন্য কারও কোনও চিহ্নই যখন খুঁজে পেল না, তখন শ্রয়নের  মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, সে কোথায়?
শ্রয়ন অবাক হয়ে জানতে চাইল, কে?
কে বুঝতে পারছ না? যাকে নিয়ে এখানে সংসার পেতেছ, সে।
সংসার!
আকাশ থেকে পড়ছ, না? এই তো এরা আছে... বলেই, ওই বাড়ির নীচ থেকে যে ছোকরাগুলো তাদের সঙ্গে গিয়েছিল, তাদের দিকে তাকিয়ে শময়িতা বলল, এই, তোমরা বলো তো এর সঙ্গে কে থাকে
ছোকরাগুলো ওর মুখের দিকে চাওয়াচাওয়ি করতে লাগল। সেটা দেখে শময়িতা বলল, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তোমরা বলো।
ওরা একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলল, কই, কেউ না তো...
তা হলে কি উনি এখানে একা থাকেন?
হ্যাঁ, তাই- তো দেখি।
এটা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে? যার অত বড় বাড়ি। বাড়িতে অতগুলো ঘর। একটু খড়কুটো পর্যন্ত নাড়তে হয় না। চাওয়ামাত্র হাতের সামনে সব কিছু পেয়ে যায়। সব ছেড়েছুড়ে সে এখানে একা থাকার জন্য আসে?
এতক্ষণ চুপচাপ ছিল শ্রয়ন। বার মুখ খুলল সেআসে। তোমার মতো বউয়ের হাত থেকে বাঁচার জন্য আসে।
আমার মতো বউ মানে? আমি কী করেছি?
কী করেছ জানো না? কোনও দিন শান্তিতে একটু ঘুমোতে দিয়েছ?
মামাতো ভাই বলল, ঘুমের সঙ্গে এখানে থাকার সম্পর্ক কী?
আমি এখানে ঘুমোতে আসি।
ঘুমোতে!
শ্রয়ন বলল, হ্যাঁ, ঘুমোতে।
কিন্তু ওরা যে বলল, এটা তোমার ফ্ল্যাট?
না। আমার না।
মামাতো ভাই জিজ্ঞেস করল, তা হলে কার?
আমার ছেলের।
শময়িতা যেন আকাশ থেকে পড়ল। ছেলের? মানে? বাবাই জানে?
না।
মামাতো ভাই ফ্ল্যাটের চার দিকে তাকিয়ে বলল, এটার দাম তো মনে হয় কোটি টাকার নীচে হবে না...
আমি কি একবারও বলেছি কোটি টাকার কম?
শময়িতা বলল, এত টাকা তুমি কোথায় পেলে?
দেশের ওই চাষের জমিগুলো আর রাখা যাচ্ছিল না। যে কোনও সময় দখল হয়ে যেত। তাই তুমি বারবার করে বলেছিলে দেখে ওগুলো বিক্রি করে দিয়েছি।
শময়িতা বলল, অতখানি জমি বিক্রি করে দিয়েছে? সেটা দিয়ে তুমি মাত্র তিন কামরার এইটুকু একটা ফ্ল্যাট কিনেছ?
না। সব টাকা দিয়ে কিনিনি। বাকি টাকা ছেলে আর তোমার নামে ফিক্সড করে দিয়েছি। মনে নেই, তোমাকে দিয়ে সে দিন কতগুলো কাগজে সই করালাম? তুমি তো উল্টেও দেখলে না কীসে সই করছ। অন্ধের মতো সই করে দিলে। ওগুলো ছিল ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজ।
এটা শুনে শময়িতার দিকে তাকাল মামাতো ভাই। শময়িতা বলল, সেটা তো আমাকে আগে বলতে পারতে। ঠিক আছে, চলো।
কোথায়?
বাড়িতে।
না। আমি যাব না।
কেন?
ঠিক আছে, আমি যেতে পারি। তবে একটা শর্তে।
কী শর্ত?
ঘুমোবার সময় আমাকে আর কখনও বিরক্ত করবে না
আর? মাথা খারাপ? একদম বিরক্ত করব না।
মামাতো ভাই বলল, তা হলে এই ফ্ল্যাটটা?
এই বাড়ির নীচ থেকে যে ছোকরাগুলো তাদের সঙ্গে এসেছিল, তাদের একজন বলে উঠল, এটা ছেড়ে দিলে আমাদের বলবেন দাদা, যে দামে কিনেছেন, তার থেকে অন্তত দশ লাখ টাকা বেশিতে বিক্রি করিয়ে দেব।
শময়িতা মুচকি হেসে বলল, সে তো বলবই। তবে মনে হয় না, আমাদের বিক্রি করার কোনও দরকার হবে। বলেই, ফ্ল্যাটের দরজায় তালা লাগিয়ে সবার সঙ্গে শময়িতাও নীচে নেমে এল। মনে মনে বলল, সত্যি, ঘুমোনোর জন্য যে কেউ রকম একটা ফ্ল্যাট কিনতে পারে, বাপের জন্মে শুনিনি। সত্যি কার পাল্লায় পড়েছি আমি। রক্ষে করো ঠাকুর। রক্ষে করো।