“ হ্যালো
সঞ্জয় বক্সী বলছেন।”“বলছি”।“ আমরা নিউ হরাইজেন থেকে বলছি। আমরা আবার আপনার বাবা কে অর্থাৎ অনন্ত বক্সী কে বাঁচাতে পেরেছি।মানে উনি রিভাইভ করেছেন। কি বলবে সঞ্জয় বুঝতে পারছে না।থতমত খেয়ে বলল, “তাই?”ওপাড় থেকে আরও উচ্ছসিত স্বর বলে চলেছে,
“ এ আবিষ্কার গোটা পৃথিবীর চিকিৎসা ক্ষেত্র কে তোলপাড় করে তুলবে।আপনার বাবার সব কিছু মনে আছে।যদিও উনার শরীর টি ৪৫ বছরের একটি মানুষের। কিন্তু কথা বললেই বুঝবেন উনি আসলে আপনাদের প্রিয় সেই মানুষ টি। উনি উদগ্রীব হয়ে আছেন আপনাদের সাথে দ্যাখা করবার জন্যে।আমরা আপনাকে ফোন করে এবার প্রেসমিট করব।বেলা ১২ টা নাগাদ কনভয় উনাকে নিয়ে আপনাদের বাড়ি পৌঁছে জাবে।বেস্ট অফ লাক্।"“ আচ্ছা ঠিক আছে” এছাড়া আর কিছু মুখ থেকে বার হোল না সঞ্জয় এর।
বাইকের
ধাক্কা তে ৬৫ বছরের বাবা মারা যান। হাসপাতালে অল্প বয়স্ক একজন ডাক্তার এসে বলেছিল। “ উনার দেহ
টা দেবেন। আমাদের একটা প্রজেক্ট আছে।”বাবা অসাধারন কিছু নন। পোড় খাওয়া গেরস্ত।এক তলা বাড়ি , পেন্সন,শরিকি
ঝামেলা, হোমিওপ্যাথি ওষুধ ,পটলার চায়ের দোকানে তিন কাপ চা…। এটাই
বাবা। তাঁর মাথাটা অন্য দেহে প্রতিস্থাপিত করা হবে। বিজ্ঞান পড়া কেরানী সঞ্জয় বক্সী রাজী হয়েছিলেন।আর তারপর ভুলেও গিয়েছিলেন। তিন বছরের ওপর হলও।আসলে অবিশ্বাস্য ব্যাপার টা নিয়ে ভাবেননি বেশী।
মোবাইল
নামিয়ে বাড়ির সব্বাই কে ব্যাপার টা বলল সঞ্জয়। সব্বাই মানে –ছেলে
আনন্দ, বউ রিনি, আর মা সুতপা। আনন্দ লাফ দিয়ে টিভি খুলল… “ ঠিক লাইভ কভারেজ দেবে”। রিনি
আজকাল হাতকাটা নাইটি পড়ে।একটু থমকে গেল সে।সুতপা প্রথম দফায় কিছুই বুঝতে পারলেন না।কিছুটা হতবুদ্ধি হয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন।তাঁর সামনে
ক্ষয়াটে আয়না।নিজের বৃদ্ধ শরীর।তাকিয়ে থাকলেন অনেকক্ষণ।যে ফিরছে আর বয়স যে ৪৫। টিভি টে সম্প্রচার হচ্ছে।“এরপর গবেষকদের মস্তিষ্ক এই ভাবে বাঁচিয়ে রাখা যাবে”… বিজ্ঞাপনের
ফাঁকে ফাঁকে বক্তব্য চলছে।সঞ্জয় বাবার চেয়ারে বসলেন , “আচ্ছা বাবা আবার পেনশন পাবেন তো”?