বিছানার চাদরটা সূতির নয়।তাই কালের দাঁত এড়িয়ে গেছে।দীর্ঘ পঁচিশ বছর বাদেও, চাদরের ওপর পার্মানেন্ট মার্কার দিয়ে আঁকা বাঘের মুখটা এখনও রয়ে গেছে । একই রকম উজ্জ্বল।
পাঁচ বছরের ছেলেকে জীবনে প্রথমবার চোখ পাকিয়ে শাসন করেছিল বিতস্তা তখন।বলেছিল ভবিষ্যতে বিছানার চাদরে,জানলার পাল্লায় বা দেওয়ালে আঁকিবুঁকি কাটলে খুব বকবে।
এখন রোজ সকাল নটার সময় যখন সাদা গাড়িটা পাশের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়,তার মিনিট দশেকের মধ্যে বিতস্তা শুনতে পায়,'মা আসছি'।অথবা কোনদিন সেই গলায় বাজে,'মা,রুমালটা দাও নি যে!মা আমার আই কার্ড?'
তখন বুকের ভেতর ভূমধ্য সাগরের ঢেউয়ের মাতন টের পায় বিতস্তা।গত তিন বছর স্কাইপ ছাড়া মুখ দেখেনি ছেলের।ছেলের কাছে যাবার আগে পা ভেঙে বসেছিল গত বছর।আর যাওয়া হয়নি।
পরম মমতায় রিটায়ার্ড ব্যাংক কর্মী বিতস্তা রায় মাঝেমাঝে অই চাদরে আঁকা বাঘের মুখে হাত বোলায় আর নাকে ভেসে আসে প্রায় ভুলে যাওয়া জন্সন বেবী লোশনের গন্ধ।