দখিনমামা আমার মামাবাড়ীর পাড়ায় থাকে।
আসল নামটা ইচ্ছে করেই বললাম না। তাহলে সবাই চিনে যাবে। দখিনমামা এখন বেশ নামকরা
লেখক। আমার মায়ের আর মামার ছোটবেলার বন্ধু। মা গল্প করে ক্লাশ ইলেভেনে পড়ার সময়
নাকি দখিনামামা বাংলা পরীক্ষায় বই দেখে সামান্য টুকতে গিয়ে গার্ডে থাকা ভীষণ
রাশভারি প্রকৃতির রমাস্যারের হাতে ধরা পড়ে গেছিল, উনি আবার ক্লাশে বাংলাই পড়াতেন । তখন এত টোকাটুকির চলও ছিলনা আর ছাত্র
আন্দোলনের জোয়ারও ছিলনা। পরীক্ষা চলাকালীনই সেই
রমাস্যার মানে রমাপ্রসাদ ব্রহ্মচারী স্যার ক্লাসের অন্য সবার সামনে দখিনমামাকে
গাধা উল্লুক বেল্লিক বলে বকে টকে গালে কষে একটা থাপ্পড়ও মেরেছিলেন। মেরে খাতায়
যতটা লেখা হয়েছিল সেটা লাল কালিতে কেটে দিয়ে বলেছিলেন – “আর জীবনে কোনোদিন নকল করবে না। এই নাও তোমার খাতা। যাও, জায়গায় গিয়ে বসে পরীক্ষা দাও।“ চরম অপমানিত দখিনামামা আর ঐ স্কুলে পড়াশুনো করেনি। তবে
কলমচর্চা আর নকলনবিশীও ছাড়েনি। এখনতো সায়েন্টিফিক কপি পেস্টের যুগে শান্তিনিকেতনি
ঝোলা কাঁধে চাপদাড়ি মুখে দখিনামামা স্বভাবকবি। মায়ের মুখেই শুনেছি দখিনামামার
প্রথম কবিতার বইয়ের ভুমিকাটা নাকি ঐ রমাপ্রসাদ ব্রহ্মচারীই লিখে দিয়েছিলেন। কে বলে
গুরুবাক্য অমান্য করলে নাকি জীবনে উন্নতি হয় না?