গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সৌমেন্দ্র লাহিড়ী

গুপ্তধন

সন্ধ্যা ছুঁইছুঁই, যদিও দুপুর থেকেই আকাশ কালো করে আছে, সময় বোঝা যাচ্ছিল না। দুপুর থেকে আমি আমার প্রিয় জানলার সামনে বসে, ছোটবেলা থেকেই এখানে বসতে খুব ভালো লাগে। একতলার কার্নিশে একটা বটচারা জন্ম নিয়ে বাড়তে বাড়তে আমার জানলার সামনে বেশ মাথা চারা দিয়ে উঠেছে। আমি জানলার সামনে আসলেই সে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে কত কথা বলে, আমিও বলি। নিঃসঙ্গতা আমাদের কত আপন করে দিয়েছে। আমরা আজ খুব ভালো বন্ধু , আর হবো নাইবা কেন ? চারাগাছটা কোনদিন মাটি ছোঁয়নি আর আমার পায়ের তলায় মাটি নেই, ওর শিকড় নোনাধরা দেওয়ালে উন্মুক্ত আর আমার শিকড় কোন যুগেই ছিঁড়ে গেছে। তফাৎ ও আছে, চারাগাছটা শিকড় দিয়ে দেওয়ালের পলেস্তারা আঁকড়ে ধরে বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আর আমার বাঁচার ইচ্ছারা আমার চারপাশে শীতের পাতার মত খসে যাচ্ছে । কিছুক্ষণ আগে আমার জানলায় লেপ্টে থাকা চৌকো আকাশ অদ্ভুত শিষ দিতে দিতে বেশ কিছু যাযাবর পাখি পার করে গেলো। বুঝলাম এবার সন্ধ্যা নামবে । ছোটবেলা থেকেই পাখি গুলি দেখলেও তাদের পরিচয় জানতে পারিনি। শুনেছি যাযাবর যারা হয় তাদের নাকি কোনও শিকড় থাকে না, কিন্তু আমি ভেবে অবাক হয়ে যাই এই ছোট্ট পাখিরা ঠিক চিনে কেমন তার আগের ঠিকানায় পৌঁছে যায় , আর আমি সমস্ত শিকড় ছিঁড়েও এই ন্যুব্জ দশ বাই দশে কেমন স্বেচ্ছায়  বন্দী হয়ে আছি।
সময় দেখার জন্যে বা কব্জির দিকে অভ্যাস বশে তাকালাম , হাতঘড়িটা পরশু থেকে আর সময় দেখাচ্ছে না। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল , দোকান থেকে বলল দেড়শ টাকা লাগবে সারাতে , শেষ পর্যন্ত পঞ্চাশে ওটা দোকানেই বেচে দিয়েছি ।দেওয়াল ঘড়ির খোলটা ঝুললেও ওটা কবে দেহ রেখেছে সে হিসেব আর মনে নেই। ।শুধু হাওয়া পেলে পেন্ডুলামটা দুদিকেই কেমন যেন ইতিবাচক মাথা দোলায়। প্রথম চাকরির প্রথম মাইনে দিয়ে কিনে বগলদাবা করে বাড়ী ফিরেছিলাম। তখনও মা বেঁচে, মা সেদিন ঘড়ি দেখে খুব খুশী হয়েছিলেন , বলেছিলেন - এবার ভাল করে সময় দেখা যাবে। আর আমি ভেবেছিলাম যদি সময়টা এবার একটু ভালো হয়।  আজ আর সময় কত হলো জানার উপায় নেই। বাইরে শব্দ করে নামল তুমুল বৃষ্টি । এবার ঘরটা পুরো অন্ধকার হয়ে গেলো। অন্ধকার ঘরে নিজেকে ভূতের মত লাগে, সেটাই এখন অভ্যাস করে নিয়েছি। খুব প্রয়োজন না থাকলে যতই অন্ধকার হোক আলো জ্বালি না। এ বাড়িতে ইলেকট্রিকের লাইন এক যুগ আগেই কেটে দিয়েছে । সারা ঘর অনেক হাতড়ে খুঁজে পেলাম মোমবাতির অবশিষ্ট ইঞ্চি দুয়েক , তাই ধরালাম।

চৌকির তলা থেকে পুরনো টিনের বাক্স টেনে বার করলাম । বাক্সটার জায়গায় জায়গায় মরচে ধরেছে, টানতে গিয়ে এক সাইডের কড়া খুলে হাতে চলে এলো। অনেক করে ঘরের মাঝামাঝি রেখে, বাক্সটা খুলে ফেললাম । এক দমকায় দীর্ঘদিন না খোলা অদ্ভুত সোঁদা গন্ধ সারা ঘরময় ছড়িয়ে পড়ল। মায়ের দুতিনটে পুরনো শাড়ি, আমার ছেলেবেলার কয়েকটা পোশাক সমেত অনেক স্মৃতি মেলে ধরল জং পড়া বাক্সটা। আমি যেন স্মৃতির সরণী বেয়ে অনেক  দুর চলে গেলাম। এই চৌকির তলা ছিলো যে কোন দুষ্টুমির পর আমার লুকোনোর জায়গা, মায়ের উপর অভিমান করলেও এখানেই জায়গা করে নিতাম, তারপর মা অনেক আদর করে যখন ডাকতেন, একছুটে মায়ের কোলে ঝাঁপিয়ে পড়তাম । হাতে ঠেকল একটা লাটাই, বের করে আনতেই মনে হলো কলকাট্টি ছেঁড়া কত ঘুড়ি কত কায়দা করে উড়িয়েছি আর নিজের কলকাট্টি ভাঙা জীবনটা আজ হাওয়ায় উড়ে যাবে। মোমবাতির শিখাটা হাওয়ায় ফড়ফড় করে উঠতেই সম্বিত ফিরে পেলাম। মোমবাতি শেষ হতে আর বেশী দেরী নেই। বাক্সের জিনিসপত্র টেনে বার করলাম, পুরনো স্মৃতি নাহয় বাড়ীর সাথেই মিশে থাকবে। আমার কয়েকটা পোশাক আর গুটিকতক বই ভরলাম, হাতের কাছে সামান্য যা জিনিসপত্র আছে গুছিয়ে নিলাম ।

বাড়িটা কাল সকালের মধ্যে ছাড়তে হবে। দেশভাগের পর ওপার থেকে এসে এই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন আমার ঠাকুরদা। বাবা-মায়ের বিয়ে , আমার জন্মও এ বাড়িতে।  অবশ্য বাবার ছেলেবেলাও এখানে কেটেছে । আমার ঠাকুরদা ঠাকুমাকে মনে নেই। বাবা একদিন অফিস থেকে ফেরার সময় নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজার পরেও আর পাওয়া যায়নি। তখন আমার আট বছর। তখন থেকেই দুঃখ কষ্ট একসাথে সংসার বেঁধেছে এই ঘরে। সতেরোতেই পাটকলে চাকরি। আর তিন বছর যেতে না যেতেই কুড়ি বছর বয়সেই আমি একা হয়ে গেছি , মা চলে গেলেন। পরের দিনটা ছিলো বাবার নিখোঁজ হবার বারো বছর পূর্ণ হবার। নিয়ম মত বাবাকে মৃত মেনে মায়ের বিধবা হওয়ার  দিন, মা সধবা থেকেই চলে গেলেন। তারপর আরও পঁয়ত্রিশ বছর কেটে গেছে। গঙ্গার পাড়ে যে পাটকলে কাজ করতাম, সেটা বছর দশেক আগে বন্ধ হয়ে যাবার পর থেকে প্রায় ঘরবন্দী। যেটুকু টাকাপয়সা পেয়েছিলাম তা প্রায় শেষ। বাঁচার কোনও ইচ্ছে আর বেঁচে নেই। কোনরকমে দিন কাটে।

বাড়িটা ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়ছে, সরকার থেকে বিপদজনক ঘোষনা করেছে বছর ছয়েক আগেই।  দুতিন দিন আগে বাড়ির দোতলার ডান দিকের কিছুটা  অংশ হঠাৎ ভেঙে পড়েছে।তাই বড় বিপদ থেকে বাঁচতে বাড়িটা কাল সকালেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। বাড়িটা এককালে গমগম করত, কত ভাড়াটে, কত লোকজন । এখন সবাই চলে গেছে। রয়ে গেছি আমি আর বগলা। আমি থাকি দোতলায় আর বগলা একতলায়। একতলার ওই ঘরটায় আগে  দাসবাবুরা থাকতেন , একদিন ছাদ থেকে একটা বড় চাঙর ভেঙে পড়তেই ওনারা বাড়ি ছাড়লেন, আর বগলা বিনে পয়সায় থাকতে চলে এলো। সেও প্রায় বছর পাঁচেক হলো।

মাঝে মাঝে বগলার সাথে কথা হয়। ও কোনকিছু লুকায়নি। বগলার জন্ম উত্তর কলকাতার পুরনো এক রেডলাইট এলাকায় । মায়ের আদরে বড় হলেও  স্বভাবতই বাবার নাম  পরিচয় তার অজানা । বারো পেরোতেই জোর করেই তাকে পেশায় নামানো হয় ।  কত স্বপ্ন সে দুচোখে বেঁধেছিল সব হারিয়ে যায়। একটা সংসার , স্বামীর স্বপ্ন দেখেছিল । জানত এ জীবনে হওয়ার নয় তবুও , যদি কোন স্বপ্নপুরুষ এসে  স্বপ্ন পুরন করে যায়। না, স্বাভাবিক ভাবেই  কেউ আসেনি । ধীরে ধীরে বগলা সেই জীবনেই অভ্যস্ত হয়ে যায়। কত পুরুষ তার বুকে মাথা রেখে কেঁদেছে হেসেছে তার হিসেব নেই। একটা কথা বারবার বগলা তার বিশ্বাস থেকেই  বলে - সমাজের উপর থেকে নিচ যারাই তার ঘরে গেছে, মনে করত পয়সার বিনিময়ে তাকে কিনে নিয়েছে, তাদের সবার এক খিদে এক চাহিদা , নখের আঁচড়েরও এক জ্বালা।  সব এক সেখানে , কোনও পার্থক্য নেই। বগলার একটা গর্ব আছে, সে তার মায়ের মতো ভুল করেনি, তার শরীরে আরেকটা প্রাণ বেড়ে ওঠার প্রশয় কখনই দেয়নি।   তারপর চলতে চলতে  বগলার শরীরটা ছিবড়ে হতে থাকে, সময়ের আগেই বুড়িয়ে যেতে থাকে, চড়া মেক-আপেও আর  বুড়িয়ে যাওয়া লুকিয়ে রাখা যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত চল্লিশ ছুঁতেই বাতিলের খাতায়। নিজেকে বড় অসহায় মনে হতো, পরিত্যক্ত মনে হতো । ঘরটাও অন্যের দখলে চলে গেলে একদিন রাতে বেরিয়ে পড়ে। অনেক জল গড়িয়ে এখন এ বাড়িতে থাকে, সামনের ফুটপাতের হোটেলে রান্নার কাজ করে। এখন বেশ নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে। আমাকে মাঝে মধ্যেই হোটেলের বাড়তি সব্জি দেয়। বুঝি জীবন জুড়ে একটা বোবা কষ্ট বুকের তলায় বয়ে বেড়ায়। একদিন বলেছিল - দাদাবাবু আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না , দেখো একদিন ঠিক রেললাইনে মাথা দেবো, নয়ত গঙ্গায় ঝাঁপ দেবো।

মোমবাতিটা শেষ। কিছুটা দপদপ করে নিভে  গেলো। অন্ধকারে ভূতের মত বসে থাকলাম কিছুক্ষণ । বাইরে পুরো সন্ধ্যা নেমে গেছে। জানলার ভাঙা খড়খড়ি দিয়ে লালচে নিওন আলো আসছে ঘরে। হাওয়ায় গাছের ছায়া আর লাল আলো যেন খেলা করছে ঘরের কোনে। লুকোচুরি খেলা, আমি কখনও লুকোতে পারিনি, শুধুই খুঁজে গেছি, ধাপ্পা খেয়ে আবারও খুঁজেছি। এখন খোঁজাও বন্ধ করে দিয়েছি । ঘরে বসে আলোছায়ার খেলা দেখি। এর আগে খালি পেটে কতরাত এই দেখেই কাটিয়ে দিয়েছি । আজই শেষ, কেমন অস্বস্তি লাগছে। উঠে পড়লাম, দরজা খুলে বাইরে এলাম। মাঝখানে সিঁড়ি এপাশে চারটে ঘর , ওপাশে চারটে ।সামনে লম্বা বারান্দা ।  ওপাশের ঘর গুলো ভেঙে পড়েছে। বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। 
- ভোকাট্টা ভোকাট্টা

চোখের সামনে ভেসে উঠল একপাল ছেলে, ঘুড়ির লড়াইয়ে ব্যস্ত , ওই তো আমি আছি। ছোটবেলায় লম্বা বারান্দায় পরপর দাঁড়িয়ে কত ঘুড়ি উড়িয়েছি। মনে হল সত্যিই আমি আছি? আচ্ছা এই থাকাটার কি কোনও মানে আছে? জানিনা , হয়ত নেই হতে পারিনি বলেই আছি। বৃষ্টিটা থেমেছে, এখনও
  আকাশ কালো , যখনতখন আবার নামবে। চারপাশে তাকালাম কেউ নেই, যেন একটা ধ্বংসস্তুপের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। পুরো বাড়িটা যেন ভাঙাকেল্লা, আর আমি তার অশরীরী রক্ষক । ঘরের দিকে গেলাম।
- বলহরি হরিবোল 
ঠিক এখানটাতেই , দরজার পাশে বারান্দায় মায়ের নিথর দেহটা শেষবারের মত শোয়ানো ছিলো। বসে পড়লাম, মাকে ছোঁয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগলাম। না, ব্যর্থ চেষ্টা। বিশ্বাস করো মা তোমার
  কাছে যেতে চাই। উঠে দাঁড়ালাম, ভেবেছিলাম এই বাড়ি থেকেই আমার মৃতদেহ একদিন বেড়োবে, হলো না, আজই আমার  জীবন্তলাশটাকে নিয়ে চলে যাব।

বৃষ্টি হচ্ছে না, ঘরের সোঁদা গন্ধ যেন বুক পেতে ডাকছে। বিছানায় বসতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু আর নয় মন খারাপ করে লাভ নেই। এখনই বেরিয়ে পড়ি, গন্তব্য কিছু নেই, যেতে যেতে যেখানে  পৌঁছাই।  হাতে পঞ্চাশ টাকা , তারপর কি হবে জানি না। এটা মানি যে মৃত্যুর ওপারে কিছু নেই।টিনের বাক্সটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম, দরজাটা খোলাই থাকল, ঘরটা প্রাণ ভরে শ্বাস নিক, হোক না একটাই রাত। ভাঙা ভাঙা সিঁড়ি বেয়ে হাতড়ে নেমে এলাম। বগলার ঘরে আলো জ্বলছে, ভাবলাম ওকে জানিয়ে যাই।
- বগলা, বগলা 
- কে? দাদাবাবু? আসুন
 
প্রথমবার বগলার ঘরের চৌকাঠ
  পেরিয়ে ঘরে ঢুকলাম। আজ আর কোনও বাছবিচার নেই। ওর দেওয়া খাবার খেলেও এতদিন ওর ঘরে ঢুকতে কেমন একটা অস্বস্তি হতো।  দেখি ভাত উপুড় দিচ্ছে ।
- বগলা আমি চলে যাচ্ছি
- কোথায় যাবেন?
 
- জানি না,যেতে হবে তাই চলে যাচ্ছি , তুমি কি করবে?
- জানি না , আমার তো কোথাও যাবার ইচ্ছে করে না।
 
এমন সময় দুর দিয়ে একটা রেলগাড়ী চলে গেল । হয়ত মেল ট্রেন । কিছু কি ইঙ্গিত দিয়ে গেল গাড়ীটা ? রেলগাড়ীর আওয়াজ কমতেই অন্যমনস্ক হয়ে বগলা বলল - হয়ত আজ রাতেই
 
  
দমকা হাওয়ার ঘরের কুপিটা নিভে গেলো, যেন আমাদের অন্ধকার জীবনটাকে আবার মনে করিয়ে দিল।
  অপেক্ষা আর ভালো লাগছে না , আমি অন্ধকারেই বললাম - যাই 
- একটু দাঁড়ান , আলোটা জ্বালি
বগলা স্যাঁতস্যাঁতে দেশলাই কাঠি দিয়ে বাতি জ্বালানোর চেষ্টা করতে থাকে , আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি। বাতিটা জ্বলার সাথে সাথেই বাইরে একটা ছোট বাচ্চার কান্না ভেসে আসে। শব্দটা খুব কাছেই, ভেতরটা মুচড়ে উঠল। বাক্সটা ফেলে ছুটে যাই, বুঝতে পারলাম কান্নার শব্দটা সিঁড়ির নিচ থেকে আসছে।  সিঁড়ির তলায় আশেপাশের দোকানের পুরনো বাক্স আর ড্যামেজ মালে ভর্তি । বগলা আলো নিয়ে এলে একটু উঁকি দিতেই দেখতে পেলাম একটা ভাঁজ করা পিচবোর্ডের বাক্সের উপরে  কাপড়ে জড়ানো একটা সদ্যজাত শিশু, কেউ ফেলে গেছে। চারদিকে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই, বাইরে গিয়েও কাউকেই খুঁজে পেলাম না।   কয়েকজনকে প্রশ্ন করে কোনও উত্তর পেলাম না। ফিরে এসে দেখি বগলা বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বসে আছে, বাচ্চাটাও কেমন চুপ করে গেছে। বগলা বাচ্চার মুখে স্নেহের চুমু দিচ্ছে বারংবার। আমি এ দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম।
-
  বগলা ?
- বাচ্চাটাকে বাঁচাতে হবে, দাদাবাবু , আমি বাচ্চাটাকে মানুষ করতে পারব না ?
বগলার চোখে আবার বাঁচার আশা চিকচিক করছে, সেটার ছোঁয়া যেন আমিও পেলাম। নতুন করে বাঁচার ইচ্ছেটা বহু বছর পর জেগে উঠল।
- পারব বগলা, আমরা ওকে সত্যিই মানুষ করতে পারব।