ঘরের ভেতর মোটা কাঁথা দিয়ে
বিভক্ত করা বারো ফুট বাই বারো ফুটের একটি রুম। ঠিক কি কারণে যে জুলেখা বেগমের মনে
হল তা বলতে পারবে না । ছেলেমেয়েদের দিকের মশারি
তুলে চীতকার করে উঠে , বাদশার আব্বা ওঠেন শীগগির ওঠেন
–
বাদশার
আব্বা মানে তাহেরুল্লার সবে দুচোখ মুদে আসছিল ঘুমে। অনেকদিন পর আজ সে জুলেখার সাথে
মিলিত হয়েছে। জুলেখা যেন মুখিয়ে ছিল। তাহেরুল্লাকে এমনভাবে ভেতরে টেনে নিচ্ছিল যে
সে বেহেশতি সুখে্র সাগরে বদর বদর বলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তা কি হল কি ? হঠাত এমন চেঁচিয়ে উঠল যে! শালার লুঙ্গিটা গেল কোহানে! অন্ধকারে সারা বিছানা হাতড়েও
খুঁজে পাচ্ছে না। শরীরের জোয়ারে কোথায় যে
ভেসে গেছে! খুট
করে আলো জ্বেলে দেয় জুলেখা। আরে কর কি কর কি বলে ছেঁড়া গামছায় লজ্জা ঢেকে ধমক দেয় , তোর কি মাথা গেছে? লাইট নেভা কলাম!”
মাঝখানের
কাঁথার বেড়া এক টানে খুলে ফেলে জুলেখা হাহাকার করে উঠে
, শবনম নাইক্যা,
পালায় গেছে
গ্যা ও বাদশার আব্বা—এইবার
লুঙ্গিটা খুঁজে পরে নেয় তাহেরুল্লা। কাল রাতেই শবনমকে খুঁজে পেতে পুলিশ দিয়ে গেছে
বাসায়। প্রায় বছর খানেক আগে শবনম হারিয়ে
গেছিল। শুকনো কাঠি অপুষ্ট শরীরের শবনমকে দেখে মনেই হত না তার বয়েস পনের।
বাদশা তার প্রথম সন্তান। বসুন্ধরা শপিং মলে এক দোকানে কাজ করে । সেখানেই থাকে, খায়,
ঘুমায়। তারপরেই শবনম। বড় মেয়ে । ওর নীচে আরো আটটা
ছেলেমেয়ে । শবনমকে কাজে দেওয়া যেত না কারণ
জুলেখা ঠিকে কাজ করত প্রায় আট বাসায়। ছোট ছোট ভাই বোনদেরদেখে রাখত শবনমই।
মাঝে মাঝে কোন গেঁদা ভাইকে কোলে নিয়ে হাতে আরেকটা ধরে সোনার গাঁ হোটেলের মোড়ে ফুলওয়ালিসেতুর সাথে গল্প করত। তাহেরুল্লা ঠেলা
চালায় ফার্নিচারের দোকানে। ছেলেমেয়রা সারাদিন ব্যস্ত পান্থপথেই ঘুরে বেড়াত। কুড়িয়ে
খেত, কুড়িয়ে নিত এটাসেটা।
গরীবের ছেলেমেয়েদের ষোল হাত। কিভাবে বাঁচতে হবে ওরা ঠিক শিখে যায়।
তো
এরকম একদিন শবনম আর ঘরে ফিরে আসেনা। ফুলওয়ালি সেতু জানালো সেদিন শবনম এসেছিল ঠিকই ।
ওর সাথে ফুলও বিক্রি করেছে কিছুক্ষণ । এক গাড়িওয়ালা ম্যাডাম শবনমকে দশটা গোলাপের
দাম একশ টাকা দিয়ে কি সব কথা বলেছিল তা ও
জানে না । শবনমের কোলে ছিল তাহেরুল্লার
ছোট মেয়ে লিজা। অসুস্থ ঘ্যানঘ্যানে দশ মাসের মেয়েটাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ভিক্ষে করত
শবনম। ভিক্ষের টাকায় রাস্তার পাশের হোটেলে ওরা ভালমন্দ খেত।কিন্তু সেদিন লিজাকে
পাশের রুমের সুফির দাদির কাছে রেখে, এই আসতেছি বলে সেই যে গেল আর এক বছর খোঁজ ছিলনা শবনমের।
পুলিশে
গেছিল তাহেরুল্লা। জিডি নেয়নি পুলিশ। তাহেরুল্লার রোগা ঢ্যাঙ্গা শরীরের এখানে
সেখানে রুলার খুঁচিয়ে পুরুষাঙ্গের উপর চাপ
দিয়ে এক পুলিশ ব্যঙ্গ করে বলেছিল, শালার এত রস আসে কইথনএইডা দিয়া ! বছর বছর বাচ্চা পুতিস। চল্লিশ বছরে
দশটা,
মরছে আরো চারটা। মাঙ্গির পুতের পাইপ ত
দেখি শিশুপার্ক। সব্বদা কোলাহল। থাকবোনাকো বদ্ধকরে
--
থানামুখো
আর হয়নি তাহেরুল্লা। কিন্তু খুঁজে গেছে। শবনমের ছবি লেমোনেটিং করে পকেটে রেখেছে সে।বাদশাকেও দিয়েছে। জুলেখাও তার পার্সে শবনমের একটি ছবি
নিয়ে মাঝে মাঝে এদিক সেদিক খুঁজে বেড়ায়।
ওদের টাকা নেই যে টিভি বা পেপারে বিজ্ঞাপন দেবে । গরীবের মেয়ে গরীবী হালেইখুঁজে
বেড়ায় ওরা। লিজা মারা গেছে। লিজার পরে আরো
একটি মেয়ে হয়েছে তাহেরুল্লা জুলেখার।
বাদশা এইবার মুখ কালো করে মার সাথে
রাগারাগি করেছে। এত ভাইবোনের খরচ সে দিতে পারবে না। একমুখে ভাত দেওয়াই এত
কষ্টের আর এতগুলো ---।
বাদশা
আজকাল বস্তির ঘরে আসে না। পুরো মাসের বেতনও দেয় না।সতের বছরের ছেলে এখন থেকেই নিজের
ভবিষ্যৎ ভাবতে শুরু করেছে । বাপরে দেখলে হেলাফেলা করে তাকায়। বরং মালিকের সাথেই
বেশি ভাব। মাঝে মাঝে মালিকের ড্রাইভারের কাছে ড্রাইভিং শেখে। পরিষ্কার জামা জুতো
পরে। দূর থেকে দেখলে তাহেরুল্লার ছেলে বলে মনে হয় না। ছোট দুই ভাইকে ফুট ফরমাসের
কাজ যোগাড় করে দিয়েছে। দুই মেয়ে কাজ করে সাহেব বাড়ি। তাদের বাচ্চার সাথে খেলে, খেলনা গুছিয়ে রাখে। সাহেবের
বাচ্চাদের সাথে গাড়িতে করে ইশকুলে যায়। এরাও খেয়ে পরে ভাল আছে। কেবল ছোট
গুঁড়োগাঁড়াগুলো বস্তির ঘরে খেয়ে না খেয়ে থাকে। তাহেরুল্লা জুলেখা বিশ্বাস করে “মুখ দেছেন যিনি , আহার দেবেন তিনি।”
বস্তির
শেষ ঘরের বাসিন্দা কালাচাঁদ গানওয়ালা বটি দা ধারানোর কাজ করে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায়ঘুরে ঘুরে বেড়ায়।
সেই এসে একদিন জানায়, তাহেরুল্লা
ভাইরে তোর মাইয়ের মত কারে যেনি দেকলাম। এক
বিবিসাবের সাথি বাজার করতি আইছিল উত্তরার
কাঁচাবাজারে ।” জুলেখা
আছাড়ি পাছাড়ি করে ছুটে আসে, ও দাদা সেকি তুমারে চেনে নাই?
তুমারে যে সে অনেক ভালবাসত!”
কালাচাঁদ সন্ত টাইপের ব্যাটাছেলে । কাঁধ পর্যন্ত
কোঁকড়া চুল। ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে আনাশান্তিনিকেতনি ব্যাগে সবসময়
গানের খাতা আর একটি বাঁশি থাকে । তিরিশের
যুবক কালাচাঁদ ঢাকার নির্জন দুপুরে নিঝুম
রাস্তায় বাঁশিতে সুরতুলেহেঁটে যায়। কোনো
কো্নো বাসার দারোয়ান বা রিকসা চালকরা, ইশকুল বা অফিসের কাছে থাকা
ড্রাইভাররা মাঝে মাঝে ডেকে বাঁশি শোনে। চা বিস্কিট বা ভাত খাওয়ায়। কখনো কিছু টাকা
দেয়। একা কালাচাঁদের দিন কেটে যায় ভালোভাবে।
পুলিশ কতবার তল্লাসি করেছে কালাচাঁদের লোহা, পাথরের ঠ্যালাগাড়ী, ব্যাগ, শরীর। নাহ
কোন নেশার দ্রব্য পায়নি। কালাচাঁদ হাসতে
হাসতে মাথা এগিয়ে দিয়ে বলেছে, মিয়ার ব্যাটারা আমার মাথা দেহো। এই
হানে নেশা আছে। জব্বর ভয়ংকর নেশা। লালনের নেশা,
রবি ঠাকুরের নেশা,
নজরুলের নেশা,
মিউজিকের নেশা। ধরতি পাল্লি জীবনভর কয়েদ করি রাখো তারে।
আমি তবে বাঁচি ! ও
আমি ধরি ধরি, ধরতে
না পাই --
তিন
মাসের অক্লান্ত চেষ্টায় শবনমকে ঠিক খুঁজে পায় তাহেরুল্লা। এবার পুলিশ সাহায্য করে
কালাচাঁদের অনুরোধে। কিন্তু মেয়ে কিছুতেই আসতে চাইছিল না। সেকি কথা! জুলেখা বিশ্বাস করতে চায়নি পুলিশের কথা। বস্তির কেউ কেউ বলে যাদু
করিছে অই মহিলা। আবার কেউ কেউ বলে, খারাপ কাজ করে মহিলা। দেখছ তোমার মেয়া কেম্নে ফুলিফাঁপি উঠিছে ! পুরুষের হাত লাগিছে ওর শরিলে! জুলেখা কাল সন্ধ্যায় মেয়েকে পেয়ে যতই কাঁদে মেয়ে তত চুপ করে যায়। বেশ জোরে মাকে ধাক্কা দিয়ে ঘরে
ঢুকে বসে থাকে। অনেকেই এসেছিল দেখতে ।
নিজের ওড়নায় মুখ ঢেকে বাবা মা ভাই বোন কারো সাথে কথা না বলে গোঁজ হয়ে বসে
আছে। বাদশা আসতে পারেনি। অন্য দুভাই দেখে গিয়ে বাদশাকে বলেছে, আফা একেবারে বড়লোকের মেয়াগো লাহান
হয়ি গেছে ভাইজান। সেই রকম ঘেন্না ঘেন্না চোখে বস্তির সবাইরে দেখতিছে।” বাদশা কাজের চাপে কিছু বলে না। ভাবে পরে এক সময় গিয়ে দেখে আসবে। তাছাড়া
এ মাসে বাবাকে টাকা দেয়নি। তার মোবাইল নষ্ট হয়ে গেছিল। মেরামত করতে অনেক টাকা
বেরিয়ে গেছে।
শবনম
রাতে কিছু খায়না। বিছানা করে ছোট দুই বোন ডাকে,
আফু তালি শুয়ে পড়েন।”বিছানার উপর ওড়না বিছিয়ে চোখ ঢেকে শুয়ে পড়ে শবনম। মাঝরাতে শরীরে
যেন হাজার হাজার বিছা কামড় দেয়। মাথাটার
ভেতরে ঢুকে গিয়ে একটানা নামতা পড়তে থাকে । তাহেরুল্লা জুলেখার শরীরী খেলার শব্দে
ঘেন্নায় ওর নাকের পাটা ফুলে উঠে। বিছানা যেন অগ্নি শয্যা। ঘর যেন নরকখানাছোটভাইবোনেরানিয়তিবলেঅভ্যস্তহয়েগেছে।
শবনম এই জন্যে পুলিশকে কতবার বলেছে , বস্তিতে সে ফিরতে চায় না। এখানেইভাল আছে। পুলিশ শোনেনি তার কথা। কালাচাঁদ কাকাকে সে খুন করবে।
হাজারবার বলেছে, ও
কাকা আমি এখানে তিনবেলা পেট ভরে খেতে পাই।
ভাল জামা জুতো এমনকি পড়াশুনাও শিখছি। কিন্তু কে শোনে শবনমের কথা! রাগে দুঃখে ঘেন্নায় কান্নার বদলে
আগুন জ্বলে চোখে।
জুলেখা
বারোয়ারী বাথরুমে নিজেকে ধুতে গেলেই শবনম বেরিয়ে আসে ঘর থেকে। বসুন্ধরা শপিং মলের
পাশের রাস্তা ঘেঁষে কালাচাঁদের ঘরের দরোজায় বসে থাকে ভোর হওয়ার অপেক্ষায়। জুলেখা ঠিক খুঁজে বের করে শবনমকে। তাহেরুল্লা
নরম গলায় বলে, কি
হইচে মা। দুসসপ্ন দেহিছিস নাহি! চল চল ঘরে চল।” জুলেখা হাত ধরে , ও শবনম চল মা।” এইবার বিদ্যুৎ তারের মত ঝলসে উঠে শবনম,
কিসের ঘর ? অই ঘরে মানুষ থাকে!” জুলেখা অবাক হয়, অই ঘরেই তো তুই এতকাল থাহিছিস রে। এক বছরে পরের ঘর তোর আপন হল! আমরা কেউ না
? বড়লোকের খাবারে এত লোভ তোর!
” এইবার আগুনের গোলা ছোঁড়ে শবনম,
হ, বড়লোকের বাসায় আলাদা ঘরে শুই। তিনবেলা খাই। টিভি দেখি, পড়ি। তোমাদের মত ছেলেমেয়ের সামনে যখন
তখন শোয় না তারা । তাদের লজ্জা আছে।
তোমাদের ত লজ্জাও করে না এতগুলো ছেলেমেয়ে বিয়োতে
?” তাহেরুল্লা পেছন থেকে সটকে পড়ে। আজকে তার ইচ্ছা ছিলনা
স্ত্রীর শরীরে ঢুকতেকিন্তু জুলেখাইহাতটা টেনে একটা বুক ধরিয়ে দিয়েছিলো।
যুদ্ধ মুরগীর মত মা মেয়ে মুখোমুখী একজন
আরেকজনকে ঠুকরে যাচ্ছে। “তোরে জম্ম দেওয়াই ভুল হইছে।
নুন খায়ায় মারি ফেললি ভাল হত।” শবনমও ঘাড় বেঁকায় , এত যখন শোয়ার ইচ্ছা তখন আলাদা ঘর বানালি ত পারতে। কুত্তা বিড়ালের
মত বাচ্চা বানায়ে ছাড়ি দেছ রাস্তায়। আবার মায়া দেখায়ে ফিরায়ে আনা হইছে নিজেদের
শোয়া দেখা্নোর জন্যে।”
জ্বলে উঠে জুলেখা,
যা যা তুই ফিরি যা। যহন বিক্রি করি দেবেনে তহন বুঝপিনি
হারামজাদী বাপ মা কি জিনিসি”। বসুন্ধরা মলের জোরালো সাদা আলোয় দিনের মত দেখা যায় জুলেখার মুখ
ছেয়ে গেছে হিংস্র অসহায়তায় । মন থেকে মুছে যাচ্ছে মায়া। নিজের মেয়ে সে বোঝে না
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক এমনই হয়। ভুলটা
কোথায় ? তার
বাপ মাও ত! নাহ, ভুলটা
বুঝতে পারে এবার জুলেখা। তার বাপ মায়ের ঘর
ছিল। কাঁচা ঘর। ছোট । কিন্তু সে ঘরে আব্রু ছিল।
খেজুর পাতার পর্দা ছিল। একটুকরোবারান্দাছিল। হোগলায়ঘেরাছিল বারান্দা।
শবনম
হেঁটে যাচ্ছে । মাথায় ওড়না জড়ানো। বড় মায়াবী লাগছে মেয়েটাকে। জুলেখার বুকটা কেঁপে উঠে। পান্থপথবিশালঅজগরেরমতদুলছে।
ষোল বছরের যুবতী মেয়ে। ভাল খেয়ে পরে গায়ে গতরে বেশ হয়েছে। বিবিসাবের মুখে শবনমের
জন্যে স্নেহ দেখেছে সে। পরিরমত দুটি ছেলেমেয়ে ছুটে এসেছিল,
হোয়াটস দ্য রং !
শবনম আপুকে কেন ফোর্সলি নিয়ে যাচ্ছেন আপনারা ! ওয়েট প্লিজ
! মাম ড্যাডাকে
কল দাও।”
সাহেব এসেছিল । ঠান্ডা গাড়ি থেকে নামতে নামতে পুলিশের সাথে কি কথা হল কে জানে।
শবনমের মাথায় হাত দিয়ে বলেছিল, যা শবনম। আইন তোকে রাখতে দেবে না। কখনো দরকার হলে ফোনে জানাস।” ছেলেমেয়ে দুটি শবনমকে জড়িয়ে কাঁদছিল। সাহেব বিবিসাবের পাশে তারা ফকিরস্য ফকির। একমাত্র রক্তের দাবী ছাড়া আর কোন জোর ছিল না
তাদের। কিন্তু সেই জোর আজ শবনম ছিঁড়ে দিল। সত্যি তো তারা কেবল জন্ম দিয়েই ছেড়ে
দিয়েছে। এখানে থাকলে ফুলওয়ালী সেতুর মত ভাড়া খাটতে হবে দরকারে বেদরকারে । তাদের ঘর
নাই কিন্তু দেহ আছে। দেহ আছে তাই কাম আছে। সেই কামের কোন আব্রু নাই।
জুলেখার
মন থেকে মুছে যায় রাগ। মাতাল, লম্পট অথবা শিকারী টহল পুলিশের হাতে পড়লে মেয়ে শেষ হয়ে যাবে।
কালাচাঁদ জানে সেই বড়লোক বাড়ির ঠিকানা। দ্রুত ছুটে এসে কালাচাঁদের বন্ধ দরোজায় আঘাত করে জুলেখা, দাদা ও দাদা, সোনাভাই আমার একটু উঠো গো গাতক!
শবনম বুঝি হারায়ে গেল ও ভাইধন ---