লঘু রচনা
লিপি কথাকলি
শনিবার সক্কাল সক্কাল একেবারে
ফোন । ঘুম থেকে উঠে সবে একটু হাত পা ছড়িয়ে পেছনের প্যাটিও-তে বসে আয়েস করছি । পুরো সপ্তাহ তো ঘোড়দৌড়ের মধ্যে
থাকি। তাই একটু
আলসেমির সাথে শনিবার সকালটাকে স্বাগত জানানো । ফোন ধরে হ্যালো বলতেই, ওপাশ থেকে: “এই
শোন আমার কি হবে উপায় ? বললাম,
“কেন রে কি হয়েছে আবার ? কোন ঝামেলা
পাকালি নাকি” ? লিপি বলেঃ
“আচ্ছা! আমি কি সব সময় ঝামেলা পাকাই নাকি ? হ্যাঁ, তুই কি রে ? তোর বন্ধু আমি, কোথায় আমাকে সাহারা দিবি তা না আমাকেই দোষ দিস সময় পেলে ? একটু দাঁড়া, আগে একটু জিরিয়ে নি” । এক একটা ঘটনাকে সুন্দর করে বলার অদ্ভুত ক্ষমতার অধিকারিণী এই লিপি ।
“আচ্ছা! আমি কি সব সময় ঝামেলা পাকাই নাকি ? হ্যাঁ, তুই কি রে ? তোর বন্ধু আমি, কোথায় আমাকে সাহারা দিবি তা না আমাকেই দোষ দিস সময় পেলে ? একটু দাঁড়া, আগে একটু জিরিয়ে নি” । এক একটা ঘটনাকে সুন্দর করে বলার অদ্ভুত ক্ষমতার অধিকারিণী এই লিপি ।
বেশ মজার কথা বলে । ওকে আমরা
বান্ধবীরা 'শান্তিনিকেতনী' বলে রাগাই । যদিও সে আদৌ কলকাতার মেয়ে নয়
খাস মুম্বাইয়া
। আমাদের এই শান্তিনিকেতনী ডাক শুনে ও রেগে বম্ । তবে ১০ মিনিটের জন্য । যাই হোক্, কোথা থেকে
যে কোথায় চলে যাই। এই আমার মস্ত বড় দোষ । কাজের কথা বলতে গিয়ে তার নাড়িনক্ষত্র
নিয়ে টানাটানি করি । কাজের কথায় আসি, লিপি বলে আমায় –“ভালো
করেই জানিস যে, তোকে না বললে আমার পেটের ভাত হজম হয় না ।
তোর সময়
আছে তো” ? বললাম, “নাটক না করে বলে ফ্যাল । কতক্ষণ আর সময় চাই
তোর ? বলে ফ্যাল ভাই
সরাসরি । আমার তো আর বাড়ি বসে থাকলে চলে না ? তাই না ?
কাজেই শুভস্য শীঘ্রম্... কাজ হাসিল কর ভাই” । লিপি
বলল “আচ্ছা বলছি শোন- -গতকাল প্রি ইস্কুল থেকে মেয়ে এসে বলে, “মা আমাকে
ইতকুলে মিত ask কলেতে-"How many ব্লাদাল
and তিতটালস you have, - আমি বলেতি: -“মি এন্ড মাই আপ কামিং ব্লাদাল । মিস নাকি আরো জিজ্ঞাসা করেছে- - বড় হয়ে সে কি
হবে ? বলেছে সে নাকি বড় হয়ে হলিউড ষ্টার হবে ।
আমি যখন
মেয়েকে আনতে যাই স্কুল থেকে ওর মিস আমাকে চোখ মেরে বলে, হাই লিপি ইওর
ডটার উইল বি এ হলিউড ষ্টার ইটস এমেজিং”
ওর কথা শুনেতো এদিকে আমার ফিকফিকানি হাসি শুরু হয়ে গেছিল । লিপি বললঃ
- আগেই হাসিস না । হাসির কিছু নেই। চুপটি করে শোন আমার অবস্থা। ও বলে চলল- আমি খালি হাসলাম ওর মিস’এর দিকে তাকিয়ে । কিই বা বলা যায় এর উত্তরে তুই বল আমায় । মনে মনে খালি বলেছিলাম, বাড়ি চল - আজ দেখাচ্ছি মজা । তাই ইয়া ইয়া করে পাশ কাটিয়ে গেছি । বাড়িতে নিয়ে এসে ওকে জিগেস করেছিলাম: -“হ্যাঁরে, মিমি মিস কে কেন বলেছিস যে, হলিউড ষ্টার হবি” ? মেয়ে বলেঃ “তুমিই তো সব সময় হলিউদ হলিউদ কলো । আমি ষ্টাল হলে তুমি আরো আমায় ভালবাতবে তাই না, মা ? -ওরে আমি কি করি বল না এই মেয়েকে নিয়ে ? কি দশা হবে আমার বুঝতে পারছিস এবার । লিপির কথা বলার ধরণ খুব মজার ।
- আগেই হাসিস না । হাসির কিছু নেই। চুপটি করে শোন আমার অবস্থা। ও বলে চলল- আমি খালি হাসলাম ওর মিস’এর দিকে তাকিয়ে । কিই বা বলা যায় এর উত্তরে তুই বল আমায় । মনে মনে খালি বলেছিলাম, বাড়ি চল - আজ দেখাচ্ছি মজা । তাই ইয়া ইয়া করে পাশ কাটিয়ে গেছি । বাড়িতে নিয়ে এসে ওকে জিগেস করেছিলাম: -“হ্যাঁরে, মিমি মিস কে কেন বলেছিস যে, হলিউড ষ্টার হবি” ? মেয়ে বলেঃ “তুমিই তো সব সময় হলিউদ হলিউদ কলো । আমি ষ্টাল হলে তুমি আরো আমায় ভালবাতবে তাই না, মা ? -ওরে আমি কি করি বল না এই মেয়েকে নিয়ে ? কি দশা হবে আমার বুঝতে পারছিস এবার । লিপির কথা বলার ধরণ খুব মজার ।
আরো শোন, আমি বললাম “মেয়েকে যে, তুই না হয় হলিউড ষ্টার হবি কিন্তু ভাইয়ের নাম রাবন রাখবি কেন” ? মেয়ের উত্তরঃ -ওই যে লাবন বদমাইতদেল-কে মেলে ফ্যালে আর তুমিই তো পাপাকে বলছিলে যে, লাবন খুউব বাআলো-তাই আমাল ভাইয়ের নাম লাবন রাখব । আমি বলেছি মিমিকে যে, তোমরা দুটি ভাইবোনে আমাকে নাচাবে সারাজীবন, তা আমি জেনে গেলাম । ওরে আমার প্রিয় জি টিভি দেখাও কি বন্ধ করতে হবে এদের জন্য, বলতে পারিস ?
আমি চুপ করে আছি দেখে অতঃপর লিপির করুণ আর্তনাদ “ওরে আমি
কি করি বলতো ? একজন হলিউড ষ্টার আর একজন রাবন কে নিয়ে আমি কি করব” ?
আমার হাসি আগেই শুরু হয়েছিল
ভাগ্যিস ফোন’এর এপারে ছিলাম! এবার আর
থাকতে না পেরে হা হা হা হা করে হেসে ফেলেছি । বললাম – “দেখিস, মিমি হলিউড ষ্টার হলে আমাকে ভুলে যাস না যেন ! লিপি
বলে: -“তুইও ওর দলে আছিস নাকি ? দুম্ করে ফোন’এর লাইনটা কেটে
দিল ।
ভাবনার কিছু নেই, আমি জানি কিছুদিনের
মধ্যে আবার ফোন আসবে, পেট পাতলা মেয়েতো ! ততদিন একটু জিরিয়ে নি ।