ওহ আপনারা এসে গেছেন। ...
আসুন, আসুন আরও কত সংখ্যা আসবে। কত চেনা মুখ, কত অচেনা মুখ। বিশেষত ২ আজ আসবেই। ও এখন রোজই আসছে। আজকে না জানি কি একটা পোশাক পড়ে আসবে। সবাই মোটামুটি অদ্ভুত সব পোশাক
আশাক পড়ে আসবে । কেমন যেন এক একটা
বস্তা ঢাকা সংখ্যা। ২ বোধহয় আরেকটা ২ কে খুঁজে যাচ্ছে , হয়ত ৩ কিংবা ৪ । আমি কি জানি এতসব? সংখ্যার যোগ বা গুন করার তত্ত্ব আমার একদম জানা নেই। আমি জানতেও চাই না। সংখ্যা দিয়ে আমার কি কাজ? আমি খুঁজি মানুষ। আর সেই মানুষ দেখতে এখানে আসা। আমার সেই প্রিয় মানুষটির কাছে আসা। আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে একটা বড় বিনুনি চলে গেছে। সেটা ধরে যেতে যেতে
১০৩ এর সাথে দেখা। আমায় দেখে হেসে বলল,''ফাঁকি দিয়ে আর কতদিন পয়সা তুলবে? "ভেংচে দিলাম। মনে মনে বললাম,
তোর কি রে
? আমি যেভাবে খুশি পয়সা তুলব। তোর বাবার পয়সা নাকি ! ১০৩ কে দেখলে মনে হয় একে আগে কথাও দেখেছি; অনেক বার ভাবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ছে না কোথায় দেখেছি? এরকম দাড়িয়ে থাকতে থাকতে আমার পেটের কাছে কিছু একটা
হয়। পেট ধরে এগিয়ে যাই সামনের দিকে, আমার সেই বুড়ো মানুষটাকে দেখব বলে। ওকে দেখার জন্যই তো আজ এতটা আসা। ওর জন্য ভারি কষ্ট হয়। সব মানুষ গুলর জন্য কষ্ট হয়, দিনরাত এক করে খেটে যাচ্ছে । তবে ওর জন্য আরেকটু বেশি। বয়স তো কম হয়নি ওর। সারাদিন কেমন ঘক ঘক করে কাশে। এই বয়সে এত খাটনি পোষায়। তোমরাই বল এই বয়সে কি
রোজ ছোটা যায়। ওই তো!
ওই তো
আমার বুড়া বাবা। কত কষ্ট গো তোমার, কত সংখ্যা কে তোমায় বয়ে নিয়ে
যেতে হয় ।
বুড়া বাবাকে একটু আদর করতেই কত সংখ্যা এগিয়ে আসে। আমায় বলতে থাকে যা শালা
ভাগ। আমাকে আর কত তাড়াবি। এই যে বুড়ো মানুষটার
উপরে চড়ে যাস, হিলি দিল্লি করিস, তোদের লজ্জা করেনা। বুড়া বাবার চোখটাও পর্যন্ত সারালি না ।
পুনশ্চঃ ৭ আর ৯৫ নিজেদের মধ্যে বলা বলি করে। ৭ বলে,"জানিস এই লোকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের
অঙ্কের মাষ্টার ছিল। খুব ব্রিলিয়ান্ট ছিল। এখন
সম্পূর্ণ মাথাটা গেছে। রোজ ৮-বি বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে আর একটা পুরানো
বাস কে
- "বুড়া বাবা, বুড়া বাবা"বলে আদর করে ।"৯৫ বলে "ব্রিলিয়ান্ট না হাতি! আসলে সেয়ানা, খোঁজ নিয়ে দেখ মাসের মাইনেটা ঠিক বিশ্ব বিদ্যালয়ের থেকে তোলে।"