গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৬

এম হাসানুজ্জামান আনসারি

সুখী

সূর্যটা পাটে বসলে গ্রামের শেষে কালভার্টে এসে জড়ো হয় চার জন বন্ধু । কালভার্টের নীচের জল সূর্যের আলোয় লাল থেকে কালো হতে থাকলে বন্ধুদের মধ্যে প্রেম বাড়ে । বাড়ে হাসি-ঠাট্টা-গল্পও । গল্পে গল্পে ইমরান বলে ওঠে নিজের প্রেম লীলার কথা, "আর যা 'ই বল ভাই, প্রেম করে যে কী সুখ তা বলে বোঝাতে পারব না ।"

ইমরান হয়তো আরো কিছু বলত কিন্তু মাঝখানে বাঁধা দিল আলম, '' আর বলছিস ভাই,
প্রেম করার জন্য কত মেয়েকে যে প্রোপোজ করলাম তার ঠিক নেই । কিন্তু দ্যাখ
কাজের কাজ তো কিছুই হল না ।'' সত্যই তাই । তার কিছুই হয়নি । নয় নয় করে
একুশ বছর বয়স হল তার । তারপরেও বেচারার একটা প্রেমিকা জুটল না ।

বাকি দুজন বন্ধু বলতে গোলাম আর আহমেদ । ওদের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়েছে বছর
দুয়েক আগে । ওরা কিছু বলল না । শুধু ইমরান আর আলমের কথা শুনে চুপচাপ
হাসতে শুরু করল নিজেদের মধ্যে । ঠিক সেই সময় ফোনটা বাজল ইমরানের । অন্য দিনও বাজে । আজও বাজল । ইমরানের হাবে-ভাবে বোঝা গেল ফোন করেছে তার প্রেমিকা সাবরিনা ।  সাবরিনা বলছে তার ফোনে ব্যালান্স নেই । এক স্যারের বিবাহ বার্ষিকীতে উইশ করবে তাই ব্যালান্স দরকার তার ফোনে । সেই দরকার মেটাতেই সাবরিনার এই জরুরী ফোন ।

এক্ষুনি রিচার্জ না করে দিলে আবার খিটখিট করবে মেয়েটা । তরকারীতে একটু
নুন কম হলে যেমন বেস্বাদ বেস্বাদ ঠেকে, সাবরিনা রাগ করলে ইমরানের ঠিক
তেমনটা মনে হয় । তাই অগত্যা বন্ধুদের গল্পের আসর ছাড়তে ছাড়তে ঠোট বেকিয়ে
ইমরান বলে উঠল, "ধুস, আর ভাল্লাগে না এসব..."

ইমরানের এই অবস্থা দেখে আরো একবার হেসে ফেলে গোলাম আর আহমেদ ।