গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

রবিবার, ১৬ জুন, ২০১৩

ইন্দ্রাণী সেনগুপ্ত

মাধু ও মাধবী
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

অঙ্কের মাস্টারমশাই বোর্ডে লিখছেন সুদকষার প্রশ্ন। মন দিয়ে খাতায় তুলছে মাধু, করে ফেলতে হবে সবার থেকে আগে। অঙ্ক করতে বেশ ভালই লাগে মাধুর। চটপট বুঝেও ফেলে সে। তাই মাস্টারমশাই একটু বেশিই স্নেহ করেন মাধুকে, জানে মাধু। হঠাৎ বাইরে থেকে একটা চাপা হট্টগোল কানে আসে। মাস্টারমশাই লেখা থামিয়ে বেরিয়ে যান ক্লাসের বাইরে। কিছুক্ষণ বাদে ফিরে আসেন গম্ভীর মুখে, 
-‘মাধু, বইপত্র গুছিয়ে নাও। তোমাকে বাড়ি ফিরতে হবে এখুনি’
ঠিক বোধগম্য হয়না মাধুর। এমন কথা এভাবে শোনা তার জীবনে প্রথমবার। চেয়ে থাকে মাধু মাস্টারমশাইয়ের দিকে। মাস্টারমশাই আরো একবার নাম ধরে ডাকেন মাধু্র। এবার কিছুটা ধাতস্ত হয়। তবে, কার্যকারণ কিছুই বুঝতে না পেরে খানিকটা যন্ত্রচালিতের মত বইপত্র গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ক্লাসরুম থেকে। বেরিয়েই চোখে পড়ে ভানুদা দাঁড়িয়ে আছে ক্লাসের বাইরে। পাশের বাড়ির ভানুদা হঠাৎ মাধুর ইস্কুলে কেন, বুঝতে পারে না মাধু। জিজ্ঞাসু বিহ্বল দৃষ্টিতে মাধু তাকায় ভানুদার দিকে। এগিয়ে আসে ভানুদা, পরম স্নেহে মাধুর মাথায় হাত রেখে বলে, -‘বাড়ি চল মাধু’
-‘কেন ভানুদা? অঙ্কের ক্লাস হচ্ছিল যে!’
-‘আবার পরে হবে। এখন চল আমার সাথে!’
       আশেপাশের ক্লাস থেকে বেশ কয়েকটা কৌতুহলী মুখ বেরিয়ে আছে, চাপা গুঞ্জন কানে আসে আবছা আবছা। ভানুদা মাধুর হাত ধরে বেরিয়ে পরে গেটের বাইরে। ইস্কুল থেকে বাড়ি মিনিট দশেকের হাঁটা পথ।লাল মাটির ধুলোয় ভরা পথ পেরিয়ে এগিয়ে চলে তারা। ভানুদা কোন কথা বলে না। শুধু মাধুর কাঁধে হাত দিয়ে নিয়ে যায়, যেন কিছুটা আগলে রাখার ভঙ্গী। স্নেহস্পর্শ অনুভব করে সে। কিন্তু, অস্পষ্টতা ঘিরে ধরে মাধুকে। তার সাথে কেমন একটা অজানা আশঙ্কায় অবশ হয়ে যেতে থাকে শরীর-মন। বিরাট ঝড়ের পূর্বাভাসের থমথমে আকাশের মত থেমে থাকে মাধুর চিন্তাশক্তি। অথবা, চিন্তা করতেই ভয় হয় মাধুর। লালমাটির রাস্তাটা ফুরিয়ে আসে ক্রমশ। রাস্তার বাঁকের গলিপথ ধরতেই চোখে পড়ে তাদের বাড়িটা, সদর দরজার বাইরে লোকে লোকারণ্য। এগিয়ে চলে ভানুদা, মাধুর হাতটা শক্ত করে ধরা থাকে তার হাতে। বিহ্বল মাধুকে নিয়ে সদর দরজা পার  হয় ভানুদা। উঠোনের একধারে বসে রয়েছে বাবা, মাথায় হাত দিয়ে। কিছুটা দূরে ঠাকমা। মাধুকে দেখেই ছুটে আসে ঠাকমা-‘শেষ সময়টায় মা’কে ছেড়ে না গেলে তোর কপালটা পুড়তো না রে হারামজাদী!’ ফ্যালফ্যাল করে তাকায় মাধু। বুঝে উঠতে পারে না কিছু। শুধু ‘মা’কথাটা তীব্রতর হয়ে ওঠে কানে। ঠাকমা হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে যায় মাধুকে ঘরের ভেতর। বিছানায় শুয়ে আছে মাধুর মা, তাঁকে ঘিরে পাড়া-প্রতিবেশীর মহিলামহল জড়ো হয়েছে ছোট্ট ঘরটায়। তিনটে বোন থম মেরে বসে রয়েছে মেঝের একটা কোণে। কোলের বোনটাকে দেখতে পায় না মাধু। মায়ের চোখ বোজা, যেন নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। দৌড়ে যায় মাধু মায়ের কাছে-‘ও মা, ঘুমোচ্ছে কেন? কি হয়েছে তোমার!’
-‘মাধু রে, তোর কপাল পুড়েছে, তোর মা যে কালঘুম ঘুমোচ্ছে রে, এ ঘুম আর ভাঙবে না’- ডুকরে ওঠে মানদাপিসি।
       মাধুর মাথায় সবকিছু কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে যায়। মা’র ঘুম ভাঙবে না কেন ! মায়ের পড়ে থাকা শরীরটা ধরে প্রবল ঝাঁকুনি দিতে থাকে মাধু-‘ও মা, ওঠো না! ইস্কুলে কি কি পড়া দিয়েছে দেখবে না? শুয়ে আছো কেন?’ ঠাকমা চিৎকার করে ওঠে –‘লেখাপড়া করে সব মাস্টারনি হবে! ইস্কুলে না গেলে এই অঘটনটা কি ঘটত! হরির মাথা গরম। মুখে মুখে মেয়েমানুষ যদি তক্ক করে, কোন ব্যাটাছেলের মাথার ঠিক থাকে! মাধু যদি ঘরে থাকত তাহলে কি এটা হত! কক্ষনও না!’ মানদা পিসি চেপে ধরে মাধুকে, ‘তোর মা নেই রে মাধু, ভগবানের কাছে চলে গেছে। এমন করিস না, শান্ত হ’। চোখের সামনে সব কিছু কেমন ঘোলাটে হয়ে যায়দমবন্ধ হয়ে আসে। মাথায় একটা প্রচন্ড ঝাঁকুনি, ঝাপসা-ঝাপসা, ঝাপসা হয়ে যায় মায়ের শরীরটাও। চেতনালোপের প্রাকমুহুর্তেও মাধু কানে বাজে, ‘মা নেই!’
       অবশ শরীরটাকে টেনে তোলে মাধু কোনক্রমে। মাথাটা যেন ফেটে যাচ্ছে যন্ত্রনায়। চারিদিক নিস্তব্ধ। খাটের পাশের জানলাটা দিয়ে আসা গুমোট অন্ধকার গ্রাস করেছে ঘরটাকেও। অন্ধকারের বুক চিরে জ্বলে থাকা প্রদীপের শিখাটা সারা ঘরে আলো ছড়াতে নিতান্তই অপারগ, আলোর দূরত্ব তাই সীমিত হাত দুয়েকের মধ্যেই। সেই আলোতেই দেখতে পায় মাধু বাবার আবছা শরীর, খাটের উপর, প্রবল নাসিকাগর্জনের সিকিভাগ প্রবেশ করে মাধুর জমাট বাঁধা কোষান্তরে। নিজেকে পায় মাধু খাটের পাশের চিলতে গলিটায়, কিছুটা দূরত্বে বোন তিনটে লেপটে আছে একটা আরেকটার গায়ে। ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে পড়ে মাধুর মায়ের অনুপস্থিতি, মনে পড়ে দুপুরের সময়টা। কিন্তু, তারপর ! আবার সব এলোমেলো, প্রবল একটা কান্না ফেটে বেরিয়ে আসতে চায়, সমস্ত কিছু তছনছ করে অস্বীকার করতে চায় বর্তমানকে। কিন্তু, পারে না কিছুই। উঠতে গিয়ে মাথাটা ঘুরে যায়, প্রবল যন্ত্রনায় অবশ হয়ে যায় মাধু। এলিয়ে পড়ে শরীর। সে কি জাগ্রত! নাকি ঘুমন্ত! নাকি মধ্যবর্তী কোন এক অবস্থা। সে যাই হোক না কেন, চেতন অবচেতন জুড়ে শুধু অবস্থান করছে একটা বিচিত্র পরিস্থিতি। মা নেই! কোথাও নেই, যতদূর পর্যন্ত ভাবা সম্ভব মাধুর পক্ষে, কোনস্থানে নেই মায়ের অস্তিত্ব। তবু দ্বিচারিতা করে মন। অনুভব করে মাধু, মায়ের গায়ের সেই গন্ধটা। মনে হয় মাধুর, এই এখুনি মা এসে বসবে তার মাথার কাছটায়। মাথায় কি অসম্ভব যন্ত্রণা, মা এসে হাত বুলিয়ে দেবে মাথায়। ভাবতে ভাবতে মায়ের স্পর্শ অনুভব করে সে। চোখ মেলে হাতড়ে বেড়ায় শূন্যতাকে। গায়ে হাত দিয়ে হঠাৎ স্পর্শ পায় নরম একখন্ড কাপড়ের। কে বা কারা মাধুকে ঢেকে দিয়ে গেছে মায়ের শাড়ি দিয়ে। মা মা গন্ধ মাখা শাড়িটাকে আলিঙ্গন করে মাধু সারা শরীরজুড়ে। দু’চোখ উপচে আসে জলে। আরাম পায় মাধু। মনে হয় একটা বিরাট বোঝা নেমে গেল, শরীরটা অনেক হালকা। ক্রমে সবকিছু ঠিকঠাক মনে পড়ে মাধুর। বাবা মেরে ফেলেছে তার মা’কে! সবাই বলছিল একথা, ঘেন্নায় কুঁকড়ে যায় শরীর। খাটের উপর নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকা লোকটাকে দেখে বিতৃষ্ণা আসে প্রচন্ড! ঐ লোকটা তার বাবা,ভাবতেই ঘেন্না হয় মাধুর। শাস্তি, চরম শাস্তি দিতে হবে লোকটাকে। মাধু জানে, পুলিশের কাছে গিয়ে বললে তারা লোকটাকে হাজতে পুরে দেবে। মাধু পড়েছে বইয়ে, দেশে পুলিশ প্রশাসন আছে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য। লোকটাকে দেখে সর্বাঙ্গ জ্বলে যাচ্ছে মাধুর। মাধু অপেক্ষা করে ভোর হওয়ার।
       বেলা দশটা, থানার বিশাল দেওয়াল ঘড়িটায় দশটা ঘণ্টাধ্বনি শুনলো মাধু পরপর। কি গমগমে আওয়াজ। ঠিক সাথে সাথেই মাধুর ডাক পড়ল।  গত তিনঘণ্টা ধরে মাধু বসে ছিল একটা বেঞ্চে। দারোগাবাবুর সময় ছিল না মাধুর সাথে কথা বলার। ইতস্তত পায়ে মাধু গিয়ে দাঁড়াল টেবিলের সামনে। দারোগাবাবু বেশ মনোযোগের সাথে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করলেন মাধুকে। অস্বস্তি হল মাধুর, তবু দাঁড়িয়ে রইল মাথা নিচু করে।
       -‘নেহাত কচি বয়স দেখছি, তা ব্যাপারটা কি?’
       -‘আমার মা’কে মেরে ফেলেছে,স্যার’
       এবার একটু গম্ভীর দেখাল দারোগাবাবুর মুখটা। -‘তুমি কি হরিদাসের মেয়ে?’
       অবাক হল মাধু। এরা জানে ওর মায়ের কথা!
       -‘হ্যাঁ স্যার। আমার বাবা মেরে ফেলেছে মা’কে’
       থমথমে মুখে প্রশ্ন করে দারোগাবাবু –‘কে বলল?’
       -‘সবাই বলছে’
       -‘তুমি দেখেছ?’
       -‘আমি তো ইস্কুলে গিয়েছিলাম!’
       -‘আচ্ছা বেশ। সবাই ভুল কথা বলছে খুকু। তোমার মায়ের মাথায় চোট লেগেছে পড়ে গিয়ে। তাই মারা গেছে’
       -‘কিন্তু,বাবাই তো ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে মা’কে!’
       -‘না খুকু, তুমি জানো না। পা পিছলে পড়ে গেছে তোমার মা। এবার বাড়ি যাও দেখি’
       -‘না, সবাই বলেছে, বাবা মেরে ফেলেছে আমার মা’কে। আমার বাবাকে শাস্তি দিন’
       ধৈর্য্য সহকারে যে এতক্ষণ কথা বলছিলেন দারোগাবাবু, তা ওনার মহানুভবতা। হঠাৎ-ই এবার ভেঙে গেল ধৈর্য্যের বাঁধ – ‘ডেপো মেয়ে কোথাকার। যা বাড়ি যা, না হলে তোকে গরাদে ঢোকাব এখুনি। এই, কে আছিস, এটাকে এখুনি বার করে দে তো এখান থেকে!’
       দু’টো লোক এসে মাধুকে হেঁচড়ে টেনে নিয়ে বার করে দিল থানার দরজা দিয়ে। বাকরূদ্ধ মাধু। হতবাক মাধু। চোখ ফেটে জল আসতে চাইল, কিন্তু, অদ্ভুত! চোখে জল এসেও যেন হারিয়ে যাচ্ছে কোথায়! শুষ্ক চোখ,শুষ্ক বুক, শুষ্কতায় ভরে যাচ্ছে সর্বাঙ্গ। মাথার ওপর গনগনে সূর্যের আলোয় যেন ঝলসে যাচ্ছে শরীর। নাকি শরীরের ভেতরের আগুনই পুড়িয়ে দিচ্ছে বাইরেটা। বোঝে না মাধু। চেনা রাস্তায় অভ্যাসে ভর করে এগিয়ে যায় মাধু, আর কোথাও যে যাওয়ার জায়গা নেই তার!
পড়ে আছে মাধু মেঝের ওপর। ঘরটা বন্ধ বাইরে থেকে। মা এটাকে বলত ভাড়ার ঘর। ঘরে যদিও তেমন কিছুই নেই, যার জন্য একে ভাড়ার ঘর বলা যেতে পারে, তবু, এককালে নাকি ছিল। সেই থাকাটাই বয়ে বেড়াচ্ছে নামটা। ঘরটায় আছে একটা এক-পা-ভাঙা চৌকি, একটা জরাজীর্ণ আলনা আর বহুদিনের জমে থাকা ধুলো ময়লার স্তূপ। ‘হ্যাঁ বাচক’ যেটুকু বর্তমান, তা হল এক চিলতে জানলা। সেই খোলা জানলাটার দিকে শূন্যদৃষ্টিতে চেয়ে আছে মাধু, শরীর নিথর। ব্যাথা সর্বাঙ্গে। একটু উঠে বসতে চেষ্টা করল মাধু, পিঠের কাছটায় প্রচন্ড যন্ত্রণা, আবার শুয়ে পড়ল। দুঃখবোধ এখন আর অনুভুত হচ্ছে না তেমন। ঘৃনা- ক্রোধ-কষ্ট- কোনকিছুই আর সেভাবে আঘাত করছে না মাধুকে। কেমন যেন একটা অনাসক্তি আঁকড়ে ধরেছে। জানলার বাইরেটা ঘন অন্ধকারে ঢাকা, ঘোলাটে চাঁদের আলোর ক্ষীণ আভায় বোঝা যাচ্ছে আকাশ মেঘে ঢাকা। চেতন-অবচেতনের মধ্যিখানে ভাসছে মাধু। ছেলেবেলার কথা মনে পড়ছে টুকরো টুকরো স্মৃতিতে। ভাবনার মধ্যে আবার হঠাৎ করে মনে হচ্ছে, ছেলেবেলাটাই যেন ঘটমান। মাধু এখন ঠিক পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়েটা, মায়ের কোলে শুয়ে ভাসছে রূপকথার সমুদ্রে, অথবা, কখনো আবার মায়ের সাথে মামাবাড়িতেসবাই খুব মজা করছে একসাথে। এর মধ্যেই একসময় খুলে যায় ভাড়ার ঘরের দরজা। মানদাপিসী এসে ঘরে ঢোকে। মাধু আবার বড় হয়ে যায় সেই মুহূর্ত থেকে। এক থালা ভাত নিয়ে ঢোকে মানদাপিসী। ঠাকমাকে দেখতে পায় মাধু দরজার বাইরে। মানদাপিসী বসে মাধুর মাথার কাছে। পরম স্নেহে মাধুর মাথাটা তুলে নেয় নিজের কোলে। মাধুর কোন ভাবান্তর চোখে পড়ে না। নির্বিকারভাবে তাকায় সে মানদাপিসীর দিকে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় মানদাপিসী। মনে হয় মায়ের হাত, চোখ বন্ধ হয়ে আসে মাধুর।
-‘মেয়েছেলেদের এত তেজ ভাল না মাধু! যা হয়েছে ভুলে যা। এবার থেকে আর বাবার অবাধ্য হোস না মাধু। মনে রাখিস উনি ছাড়া আর কেউ নেই তোদের, রাখলে উনিই রাখবেন, মারলে উনিই মারবেন। ওনার সব কথা মেনে চলবি সবসময়। জানিস তো তোর বাবার সাথে পার্টির লোকদের কেমন দহরম-মহরম। পুলিশ-পার্টি সব এক’।

কোন উত্তর করে না মাধু। হয়ত কানেও যায় না কথাগুলো। মানদাপিসী এবার মাধুকে ধরে উঠিয়ে বসায়, ভাত মেখে খাইয়ে দেয়। তারপর কিছুটা ইতস্তত করে বলে –‘মাধু, বাবা তোর বিয়ে ঠিক করছে। তাড়াতাড়িই দিয়ে দেবেন মনে হয়। সেটাই ভাল হবে। এই পাপের সংসারে আর থাকতে হবে না’। মানদাপিসী আর দাঁড়ায় না।তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে। মাধু তাকিয়ে থাকে দরজার দিকে। দরজাটা আবার বন্ধ হয়ে যায় বাইরে থেকে। মাধু তাকায় খোলা জানলার বাইরের ফালি আকাশটার দিকে। এখনও মেঘে ঢাকা আকাশ। মেঘের ফাঁক দিয়ে চাঁদের আবছা আলোতে প্রকৃতি যেন আরো বেশি অন্ধকার। 
(আগামী সংখ্যায় সমাপ্য )