গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১২

এ বি এম সোহেল রশিদ


হিমেলের হীম কান্না

         ক্রিং ক্রিং মোবাইল বাজছে।অপরিচিত নাম্বার সাধারণত ধরি না । তাই ধরলাম না। আবার বাজলো অন্য নাম্বার থেকে এটাও অপরিচিত। কিছুক্ষণ পর আবার বাজলো। এটা বিদেশি নাম্বার । সম্ভবত থাইল্যান্ডের । বিদেশী নাম্বার যখন, তখন ধরি। ইতস্তত করতে করতে কেটে গেল । কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে আবার ফোন বাজল । একই নাম্বার। ধরলাম 
-হ্যালো ?
-কি ফোন ধরেন না কেন । আমি হিমেল।
-তোমার নাম্বার আমি চিনি । এ নাম্বার আমার কাছে নেই বুঝবো কি করে।
- শুনেন আমার একটা কাজ করে দিতে হবে। বিয়ে করুম । বিয়ে পড়িয়ে দিবেন।- কি বল তুমি থাক ব্যাংকক । আমি কি করে বিয়ে করিয়ে দিব। মেয়েইবা পাব কোথায়? আর তুমি কি আসলেই বিয়ে করবে
- সিরিয়াস। বিয়ে ঠিকঠাক। পাত্রীও ঠিক । আপনি শুধু বিয়ে করিয়ে দিবেন
- আরে আমি কি কাজী নাকি? তোমাকে বিয়ে করিয়ে দিব। আর খুলেই বল । আসল ঘটনাটা কি?
- সব বলব। রাতে ফোন রিসিভ কইরেন। এখন একটা নাম্বার রাখেন এই হল আমার হবু বৌ। ও ই আপনাকে ফোন করবে। ঢাকায় বিদেশী একটা ফার্মে চাকুরী করে। ব্যাংককেই আমার সাথে পরিচয়। ওর বাসারও কেউ রাজি নয় আমার বাসারও কেউ রাজি নয়। বুঝতেই পারছেন কি বিপদে আছি। সত্যি কথা বলতে কি আমার বাসায় জানাতেই সাহস পাই নি। বাকি কথা রাতে বলবো।  এখন একটা কাজ আছে। রাতে কথা হবে। আস্ সালামু আলাইকুম বলে ফোন কেটে দিল।

         রাকিব সাহেব ভাবনায় পড়ে গে্লেন এ কেমন কথা। বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ বিয়ে করিয়ে দিন। উটকো ঝামেলা। এমনিতেই সাত পাঁচে জড়াতে চান না। নিজেকে সব সময় অন্য সবার চেয়ে আলাদা করে রাখেন। গো বেচারা টাইপের হলেও মানুষের ধারনা তার বুদ্ধি একটু বেশী। বেশী বুদ্ধির লোকেরা নাকি বিপদজনক হয়। ভাবতে ভাবতে কখন এসে পরেন মতিঝিলে টেরই পান নি। ড্রাইভারের ডাকে সম্বিত ফিরে পান। আজ আর অফিস করতে ভাল লাগছে না। এমনি ডলারের দাম উঠা নামা করায় আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে তেমন সুবিধা করতে পারছেন না রাকিব সাহেব। ব্যবসায় মন্দা ভাবটা অনেক দিন ধরেই । তার পরও ধরে রেখেছেন সুদিনের আশায়। কর্মচারীরাও দায় গোছের কাজ করছে । তিনি বুঝতে পারেন অফিসের কনফিডেন্সিয়াল নিউজ গুলো অফিসের কেউ এক জন প্রতিদ্বন্দ্বী অফিসের লোকদের কাছে অর্থের বিনিময়ে পাচার করে দিচ্ছে। কে করতে পারে তাও অনুমান করতে পেরেছেন। কিন্তু ব্যবস্থা যে নিবেন তাও পারছেন না । অফিসের ভিতরে সেই সবচাইতে বেশী কাজ করে। দুএকটা ব্যবসা যা ও হচ্ছে তা তারই বদৌলতে। বাড়তি চাপ একদম সইতে পারেন না। তবু যে কাজ করেন মনোযোগের সাথে নিখুঁত ভাবে করেন। বিয়ে করানোর পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলেও এ রকম এক পক্ষ একদম অপরিচিত, এমন ঝামেলায় কখনও পড়েন নাই। তাছাড়া মেয়ে পক্ষ সম্বন্ধে কিছুই জানেন না। একেবারে অন্ধকারে থেকে কি ভাবে এ কাজটি করবেন। তাছাড়া হিমেলের পরিবারই বা বিষয়টা কি ভাবে নিবে। বোঝে উঠতে পারছেন না। হিমেলকে না করে দেবেন ভাবছেন। কিন্তু তিনি জানেন সব জায়গায় ব্যর্থ হয়েই তার শরণাপন্ন হয়েছে । তাছাড়া গোপন রাখার বিষয় যদি থাকে তাহলে তিনি ছাড়া তার কাছে বিকল্প নেই। আচ্ছা এতোই বা ভাবছেন কেন। আগে সব খুলে বলুক তার পর দেখা যাবে। 
       আজকে একটু আগে ভাগেই অফিস থেকে বের হলেন। সিরাজকে খুঁজে বের করতে হবে। হিমেলের সাথে তার একটা গভীর সম্পর্ক আছে। সম্পর্কটা কিসের তা পরিষ্কার নয় । এ নিয়ে কয়েকবার প্রশ্ন করেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া ভাল । দুজনের বয়সের ব্যবধান বিশ বছরের কম নয় কিন্তু চলেন এক সাথে। বহু রাত এক সাথে আড্ডা মেরে কাটিয়ে দিয়েছেন।দুরন্ত যারা তারা মনের দিক থেকে যতটা খোলা মেলা হওয়া দরকার ঠিক ততোটা খোলামেলা নয়। সব সময় হিসেব করে পা ফেলা হিমেলের অভ্যাস। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করতে চাওয়ার মধ্যে তার স্বভাব সুলভ কোন আচরণেরই মিল খুঁজে পাচ্ছি না।
        গুলশানের একটা ক্লাব আছে কিছু রাজনীতিক তাদের আড্ডা মারার জন্য এ ক্লাবের গোড়াপত্তন ঘটায়। নিরিবিলি আড্ডা মারার জন্য ভাল । আজকাল ক্লাব মানেই সস্তায় মদ পান করার একটা নিরাপদ আশ্রয়। সে দিক থেকে এ ক্লাব অনেকটাই নিরিবিলি ও নিরাপদ। রিসেপসনে খোঁজ করতেই সিরাজকে পাওয়া গেল । ভিতরে ঢুকেই দেখলাম একাই বসে আছেন । কিছুক্ষণ আগেই এসেছেন। আজ ক্লাবে হাউজি খেলা । তাই সবাই হল রুমে । এ দিকটা নিরিবিলি। আমাকে দেখেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল –
- কেমন আছ?
- ভাল। আজকাল আমার এখানে যাওয়াই ছেড়ে দিয়েছ।
- না এখন আর বাসা থেকে বেশী বের হই না। সন্ধ্যায় ক্লাব আর বাসা ব্যাস এ পর্যন্ত। 
- হুম বুঝলাম।
- তা চলবে নাকি
- হ্যাঁ চলবে আগের মত
- তোমার তো সেভেন আপ লাইট আর চিকেন সালাদ 
- হ্যাঁ তাই । তুমি খাও তবে কম করে খাও
- না এখন আর আগের মত চলে না ওই তিন থেকে চার টা। অর্ডার দিল।  ড্রিংকস চলে এসেছে। খাবার একটু পরে আসবে। সিরাজ চুমুক দিয়ে জিগ্যেস করল।
- হঠাৎ কি মনে করে। কোন খবর না দিয়েই সরাসরি। এনিথিং রঙ। 
- না । সব ঠিক আছে। এমনি আসলাম। মনে পড়লো তাই। মনে মনে ভাবছি।  ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না হিমেলের বিষয়টা বলা ঠিক হবে কি না। এরই মধ্যে ওয়েটার চিকেন সালাদ দিয়ে গেল সাথে ছোলা সিদ্ধ। এটা এখানে সবার কমন খাবার। এলকোহলের সাথে এর কি যোগ সূত্র আছে তা যারা খান শুধু তারাই জানেন। সাত পাঁচ ভেবে লাভ নেই।সমস্যা বুকে পুষলে এর শাখা প্রশাখা গজায়। অদ্ভুত অদ্ভুত চিন্তা মাথায় আসে। অজানা ভয় এস ভর করে। বলেই ফেলি। সব শুনে মৃদু হাসলেন আসলাম সাহেব। ‘আরে এ কোন ব্যাপারই না’ আসলে আমি ভাবছি বিয়ে করাতে গেলে একজন অভিভাবক লাগে । এ ধরনের বিয়েতে ওর পরিবারের কেউ রাজি হবে বলে মনে হয় না। তাছাড়া বিষয়টা আমি আর কাউকে জানাতে চাচ্ছি না।
‘নো প্রবলেম! আমি আছি না জাতীয় অভিভাবক হা হা হা হা । দূর মিয়া এত চিন্তা করার কি হল’? বলেই এক চুমুকে দ্বিতীয় পেগ শেষ করল। যাক আপাতত একটা চিন্তা দূর হল। আপাতত বললাম এই জন্য যে নেশায় কত কিছুই বলে মানুষ । সকালেই সব ভুলে যায়। তবে আসলামকে যতটুকু চিনি সে এ ধরনের না। তবু আশংকা থেকেই যায়। আরেক পেগ এরই মাঝে নিয়ে এসেছে ওয়েটার। চুমুক দিতে দিতে জিজ্ঞেস করল আসলাম  ‘কাজী পরিচিত আছে’
- একজনকে চিনি। মিরপুর থাকে। ওই এলাকার কাজী। হাজী গিয়াস উদ্দিন।ফোন নাম্বার আছে। 
- ফোন করে দেখ
- তা করতে পারি। এখন করব
- হ্যাঁ এখনই কর মোবাইলের ফোন বুকে নাম্বারটা খুঁজে পেতে বেশী সময় লাগল না। রিংটোন বাজতেই ও প্রান্ত থেকে চিৎকার করে বলতে লাগল।
- আস্-সালামু- আলাইকুম বড় ভাই। কেমন আছেন। অনেক দিন পর। বলেন কি খেদমত করতে পরি। এই কাজীর এই একটা সমস্যা। সবাইকে মনে করে মক্কেল।কানে বোধ হয় কম শুনে । নতুবা মোবাইলের কোন সমস্যা হবে 
- না ভাই আমি ভাল আছি। ভাই বিয়ে পড়াতে হবে। 
- এ বয়সে আবার বিয়ে করবেন। - আরে না না আমার না।
- আরে আপনার সাথে একটু মশকরা করলাম। এতে দুজনের সম্পর্ক আরও সহজ হবে। সব খুলে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। মনে মনে ভাবলাম বিচিত্র মানুষ বিচিত্র তাদের যুক্তি।
- ছেলে বিদেশে । মেয়ে এখানে বিয়েতে কি লাগবে।
- কোথায় হবে
- কোথায় হবে মানে আপনার ওখানেই হবে। ঝামেলা করতে চাই না।
- ঠিক আছে। একজন সাক্ষী নিয়ে চলে আসবেন । বয়সের সার্টিফিকেট বা একাডেমিক সার্টিফিকেট ।    বাকি সব আমি সামলে নিব। আচ্ছা ভাইজান কোন ঝামেলা নাইত । 
- আরে না । আপনাকে বিস্তারিত কাল জানাবো। এমনও হতে পারে কালই বিয়ে।
- এটা কোন ব্যাপার না আমাকে শুধু ফোন করে জানাবেন । ব্যাস। 
- কাজীর ব্যবস্থা হলঅভিভাবকের ব্যবস্থা হল। এবার চল ফিরে যাই । 
- তুমি যাও আজ আমার যেতে একটু দেরী হবে
- ঠিক আছে আমি গেলাম। গাড়ীতে উঠে বাসার দিকে যেতে বললাম । ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করল। রাত তখন প্রায় বারটা হবে। ঘড়ি দেখতে ইচ্ছে করছে না। তবু সামনে গাড়ির ঘড়িটা দেখলাম। এগারটা চুয়ান্ন।  আচ্ছা এখনও তো ফোন করল না হিমেল। হয়ত করবে আরও রাতে । না করলেও ভাল । উটকো ঝামেলা থেকে বেঁচে যাই। এ বয়সে এখন আর এসব ভাল লাগে না। খুব সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল। রাতে হিমেলের ফোন না আসাতে একটা অস্বস্তি কাজ করছে। কালকের নাম্বারটা তো সেইভ করে রাখা হয় নাই। ওর একটা নাম্বার আছে ফোন করে দেখব। ফোন করা কি ঠিক হবে। কিন্তু সময়ের সাথে আমার অস্বস্তি বাড়তে লাগলো।ফোন করেই দেখিরিং হয় কেউ ধরে না। আবারও রিং করি। না কেউ ধরে না। কি রা যায়। দারোয়ান এসে আজকের পত্রিকা দিয়ে যায়। পত্রিকার হাতে নিতেই দেখি সড়ক দুর্ঘটনার খবর। খবরটি হুবহু এরকম ।
‘থাইল্যান্ডে এক বাংলাদেশীর মৃত্যু’ ঢাকা, ১৪ মে :- থাইল্যান্ডের পর্যটন শহর পাতাইয়ার এক হোটেলে অজ্ঞাত নামা এক বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে। ওই হোটেলের কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অন্য দুই বাংলাদেশীকে। এ দুজন রয়েছেন অচেতন। গতকাল থাইল্যান্ডের অনলাইন পাতাইয়া নিউজ এ খবর দিয়েছে। ১০ই মে তারা পর্যটন নগরী পাতাইয়ায় যান। ১১ই মে তাদের উদ্ধার করা হয়। ১০ই মে তারা মধ্য পাতাইয়ার বেলা এক্সপ্রেস হোটেলের পাঁচ তলার একটি বড় কক্ষে ওঠেন। ১১ই মে সকালে তাদের সাড়া না পেয়ে দরজা খুলে একজনকে মৃত, বাকি দুজনকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। হোটেলের কর্মীরা জানান, ১০ই মে রাত একটার দিকে একজন থাই যৌনকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে ঢোকেন তারা। হোটেলের নিয়মানুযায়ী ওই তরুণী তার পরিচয়পত্র কাউন্টারে জমা রাখেন। ১১ই মে ভোরে কাউন্টার থেকে পরিচয়পত্র না নিয়েই একটি বড় ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যান ওই তরুণী। পাতাইয়া পুলিশ জানিয়েছে, ওই কক্ষটির সবকিছুই ছিল এলোমেলো। তিন বাংলাদেশীর লাগেজগুলো বলপ্রয়োগে খোলা হয়েছে। কক্ষের সিন্দুকটিও ভাঙা পাওয়া গেছে। জিনিসপত্র কক্ষে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। বাথরুমে ১০টি খালি বিয়ারের ক্যান পাওয়া গেছে। ওই তিনজনকে বিয়ারে মিশিয়ে শক্তিশালী চেতনা নাশক বা অবশকারী দ্রব্য প্রয়োগ করে সব লুটে নিয়ে গেছেন ওই তরুণী। এছাড়া ওই তিনজনের ব্যাগের মধ্যে বেশকিছু সাধারণ ওষুধও পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজনের ব্যাগের মধ্যে পাওয়া গেছে হাঁপানির ওষুধ। হাঁপানির ঔষধটাই খটকা লাগার মূল কারণ। হিমেলকে সব সময় ইন হেলার সাথে রাখতে দেখেছি। যদিও এর ব্যাবহার আমার সামনে চোখে পড়ে নি হিমেলতো গতকাল ব্যাংকক ছিল। পাতাইয়াতে গেলে তো ও আমাকে ফোন জানাত। অন্য কেউ হবে। কিন্তু আমার ফোন রিসিভ করছে না কেনএমন সময় ফোন বাজে। নাম্বার না দেখেই দ্রুত রিসিভ করি । জিজ্ঞাসা করি “হ্যালো, হ্যালো কে বলছেন” এটি মেয়ের কণ্ঠ।
-     আমি নবিতা । হিমেল আপনাকে ফোন করতে বলেছে। - হ্যাঁ তুমি কি হিমেলের...
- জি আমি হিমেলের বাগদত্তা ছিলাম।  - ছিলাম মানে  - কাল রাতে বাবা মা তাদের পছন্দের ছেলের সাথে জোর করে আমার বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। আমি সবার অগোচরে বিষয়টি আপনাকে জানালাম। আমাকে ফোন ব্যাবহার করতে দিবে না। আমার মোবাইলে যে ব্যালেন্স আছে তা দিয়ে থাইল্যান্ডে ফোন করা সম্ভব নয়। তাই আপনাকে জানালাম। আমি অসহায়।
কি বলব কি বলা উচিত কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। সান্ত্বনা দেব নাকি ধিক্কার দেব ।- ঠিক আছে। আমি বলে দেব।  - আমাকে ক্ষমা করতে বলবেন।
বেলা বারটার দিকে একটা ফোন আসে। । থাইল্যান্ডে থেকে অপরিচিত নাম্বার। রিসিভ করতেই ও পাশ থেকে হিমেলের কণ্ঠ। “ভাইজান ফোন দিচ্ছিলেন দেখছি। কিন্তু নবিতাকে পাচ্ছিনা ওর ফোন বন্ধ। তাই আপনাকে ফোন করি নাই। জানি না কি করব। ওর কেন বিপদ হয় নি তো
- দেখ হিমেল মানুষের বিপদ হতে কতক্ষণ।  - আমি দেশে চলে আসব । টিকেট বুকিং দিয়ে দিয়েছি পরশু বা তার পরের দিন ফ্লাইট কনফার্ম হয়ে যাবে।আমি আসছি তারপর সব কথা হবে। - তুমি শান্ত হও । এখন আর আসার দরকার নেই। আমি সব ঠিক করে তোমাকে আসতে বলবো।
- সব ঠিক করবেন মানে । - তোমার জন্য মেয়ে দেখবো। - মেয়ে দেখবো, কি বলছেন আপনি? - হ্যাঁ নবিতার সাথে আমার কথা হয়েছে । ওর গতকালই বিয়ে হয়ে গেছে। - কি বলছেন আপনি । না আমি বিশ্বাস করি না । আপনি মিথ্যে বলছেন। - শান্ত হও হিমেল শান্ত হও। ভালবাসা মানে শুধু বিয়েতেই সীমাবদ্ধ নয় । ভালবাসা এক অপরের মঙ্গল কামনাতেও প্রকাশ পায়।
- রাকিব ভাই আপনি জানেন না ও আমাকে কতটা ভাল বাসত।
- দেখ আমাদের সমাজে মেয়েদের মতামতের কি কোন মূল্য আছে। বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়ের মতামতের যেখানে সবচেয়ে বেশী দরকার সেখানেই তারা সবচেয়ে উপেক্ষিত। আমার চোখেও অশ্রু। আমি কাঁদছি কেন ? আমার কান্না করার কোন যুক্তি নেই। কিন্তু কি করবো আমার চোখে বৃষ্টি নেমেছে আজ । ঝরুক বৃষ্টি। হিমেল আর কথা বলতে পারল না। ওর চোখে অশ্রু আর বুকের ঝড় আমি অনুভব করতে পারি। হিমেলের ভালবাসা হীমখণ্ডের নীচে চাপা পড়েছে। বিদেশ বিভূঁয়ে হিমেলের হীম কান্না শুনবে না কেউ। এ এক অসহনীয় যন্ত্রণা।

           
   আগের সংখ্যা (৩৬তম সংখ্যা) দেখুন এখানে ক্লিক করে
      http://galpogucchho.blogspot.in/2012/10/blog-post_7527.html