লার্ভা
মনে পড়ে,
সেদিন নন্দনে বৃষ্টিস্নাত এক দুপুরে তুমি আমি একই ছাতার তলায় ।
পড়ে? হয়তো পড়ে না । তুমি এখন নিরুদ্দেশে। ভালো আছো
নিশ্চয়। ভালো থেকো । সেদিনটা আমি আজও ভুলিনি । হলুদ রঙের শাড়িতে নিজেকে মুড়ে
ছিলাম। তোমার পছন্দের হলুদ । মেট্রো থেকে রাস্তা পার হতে গিয়ে ঝমঝমিয়ে বড় বড়
ফোঁটার় বৃষ্টি নিমিষেই ভিজিয়ে দিল দুজনকে। ব্যাগ থেকে ছাতা, ছাতার নিচে দুটো মাথা । ভালোবাসার আবেশে তোমার চুম্বন কানের লতিতে ।
রাঙ্গা মুখ রাঙ্গা হল শতগুণ।ভালোবাসা মন থেকে শরীরে । স্থান,কাল পাত্র তোমার হিসাবের বাইরে। মুখে বললে ভালোবাসা হিসাব মানে না। কি
করে বোঝাই তোমায়, রান্নাতে সব উপকরন ঠিক ঠিক না হলে
রান্না তোমার মুখদিয়েও যাবে না কবি। ভালোবাসাতেও হৃদয় ও শরীর একে অন্যের পরিপূরক। কলকাতার
ব্যস্ততম রাস্তায় তোমার আদিমতা কে থামাতে পারলেও ঘরের একান্ত বাসরে মুষলধারে
বৃষ্টি নামল আমার শরীরে।দুজনেই বেহিসাবী পরকীয়ায় ভিজলাম। আজও সকাল থেকে বৃষ্টি
পড়ছে । আমি জানলার ধারে। সজনে গাছে শুঁয়োপোকার লার্ভা জড়িয়ে আছে ডালে ডালে।
জানিনা ওরা বাঁচবে কিনা ,এই বড় বড় জলের ফোঁটার সাথে
যুদ্ধে। ওদের তো সমাজ নেই, পরনিন্দা নেই। ওদের সন্তানরা
নির্দিষ্ট জীবন চক্রে বড় হয়, পাখা মেলে কবির কবিতার
জন্ম দেয় । কিন্তু আমার লার্ভা কোন্ পৃথিবীতে বড় হবে, পাখা
মেলে দেশ দেশান্তরে যাবে? বাতাসে বিষাক্ত গ্যাস, জীবনের হাহাকার।উদ্ভ্রান্ত এক মা তার আত্মজ কে নিজ হাতে খুন করল।রক্ত
!কী রক্ত! দুজনার নাড়ী বিচ্ছেদ । তুমি হিসাব রাখনা। প্রতি মিনিট, সেকেন্ড ঘণ্টা কিভাবে ওকে আগলে রেখেছি। বৃষ্টির ফোঁটা আজ আমার চোখের
জলের ফোঁটার থেকে অনেক ,অনেক ছোটো।