গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

দেবাশীষ দে


সম্পর্ক


রুমেলি বিজনকে ভালোবাসে। ওদের প্রমের বয়েস চার মাস হলেও রুমেলি বাড়িতে সে  কথা জানায়নি। কলেজে যাওয়া আসার পথে সে সময় দেয় বিজনকে।
       
কলেজে এক্সকারসনে গ্যাংটক যাওয়ার জন্য রুমেলি আবদার করে বাবা মা’র কাছে, একমাত্র সন্তানের আবদার রাখে বাবা মা। এক্সকারসনের নামে বিজনের সাথে শিলিগুড়ি যাওয়ার  কথা বাবা মা টের পায় না।

রুমেলি শিলিগুড়ি হোটেলে। বাবা মাকে ফোনে জানায় ঠিক ঠাক পৌঁছেছে ও। বিজন, বাইরে কিছু খাবার আনতে হবে, বলে রুমেলিকে। বিজনের মোবাইলে ব্যাটারি চার্জ নেই তাই সে রুমেলির ফোনটা সঙ্গে নেয়, যাওয়ার সময় বলে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই খাবার নিয়ে ফিরে আসছে সে।
       
প্রায় আধ ঘন্টা পর দুজন লোক এসে হোটেলে রুমেলিদের দরজা নক করে। রুমেলি বিজন ভেবে দরজা খুলে দেয়। তারা জানায় রাস্তায় বিজনকে একটা গাড়ি ধাক্কা মেরেছে,ও বেহুঁস এখন, রুমেলিকে তারা সঙ্গে নিয়ে যেতে চায় হসপিটালে। রুমেলি কিছু ভাবতে পারে না, ওদের সঙ্গে  যায়।
       
গাড়ি বেশ কিছুটা যাওয়ার পর একটা  ছোটো বাড়ির সামনে থামে। রুমেলি সামনে হসপিটাল দেখতে পায় না, বিজনকেও দেখতে পায় না। ওরা ধাক্কা দিয়ে রুমেলিকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। ওদের কাছে বিজনের কথা জানতে চাইলে ওরা খারাপ খারাপ কথা বলে, ভয় দেখায়............ তার পরের কথা রুমেলির মনে পড়ে না।
       
তিনদিন হল রুমেলি এখন ব্যবসায়ী হয়ে গিয়েছে। রোজ খদ্দের আসে তার ঘরে, রুমেলি বুঝতে পারে না সে এখন কোন দেশে আছে। বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ তার। অসহায় রুমেলি বোঝে ভালবাসাতেও চোরা বালি থাকে।
       
রুমেলির বাবা মা বহু চেষ্টা করেও মেয়ের সন্ধান পায় না । অসহায় দুজোড়া চোখ শুধু রেডিও, পেপার আর টিভিতে খুঁজে বেড়ায় তাদের একমাত্র সন্তানকে।