রাধামঙ্গল
রাধার জন্ম:
পাঠক বিশ্বাস করেন আর নাই করেন এই
রাধার জন্ম এইভাবেই। একবার বিষ্ণু রম্যবনে প্রবেশ করে রমণ ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ফলে
কৃষ্ণের ডান অংশ থেকে কৃষ্ণমূর্তি
ও বাম অংশ থেকে রাধা মূর্তি প্রকাশ পায়। রাধা কৃষ্ণকে কামাতুর দেখে তাঁর দিকে অগ্রসর
হন। রা অর্থ লাভ এবং ধা অর্থ ধাবমান। ইনিই অগ্রসর হয়ে কৃষ্ণকে লাভ করেছিলেন বলে- এঁর নাম হয়েছিল রাধা।
পৃথিবীতে পা পড়ল রাধার।
বলুন – জয় রাধা।
রাধার
কিশোর বেলা:
এ পাড়া থেকে ও পাড়া ঘুরে বেড়ায়
রাধা। রাধার কথার শেষ নেই। রাধার জানার শেষ নেই। রাধার আকুল হওয়ার, বিহ্বলিত হওয়ার শেষ নেই। মা পারেন
না রাধাকে বোঝাতে, রাধাই বরং মাকে বোঝান। পাড়ার সমস্ত
কাকীদের সাথে রাধার খাতির। রাধা এক্কা দুক্কা খেলে খেলে পার করে দেয় বেলা। রাধা
দুপুর বেলা কোথায় খাওয়া-দাওয়া করে কেউ জানে
না। একবার এ বাড়ি তো,কাল অন্য বাড়ি। রাধা ছুটে চলে,নিজের মত,নিজের উচ্ছ্বাসে। সমস্ত পাড়া
রাধাময়। সমস্ত পাড়াই রাধা। সমস্ত পাড়াই
রাধাময়।
বলুন – জয় রাধা।
রাধার
রূপের বর্ণনা:
কালো রাতের তারা হাসাহাসি করে রাধার
চুলে। রাধার হাসিতে হেসে ওঠে দেবকুল। রাধার মসৃন হাতে স্পর্শে জেগে ওঠে সবুজ ঘাস।
রাধার চোখে চোখ রেখে কত দেবতা হয়ে যায়
অজ্ঞান। রাধার আঙ্গুল যেন কচি ঘাসের লতা। রাধার কুচযুগলে তারারা সুশোভিত। নাভি যেন
এক ফোটা শিশির। রাধার কথা সুরের মালায় গাথা অসংখ্যা শব্দ।
বলুন – জয় রাধা।
রাধার
কলেজ গমন ও দেবতাদের উল্লাস ও সহপাঠীদের হত্যা-ধর্ষণ:
প্রতিদিন কলেজে যায় রাধা। অনেক পড়তে
হবে তার। প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠে বাড়ির সকালের সমস্ত কাজ শেষে রাধা যায় কলেজে।
কলেজে রাধার প্রেমে পড়ে আছে সমস্ত ছেলেরা।
একবার দেখামাত্র কেউ চোখ ফেরাতে পারত না। কেউ ফেরাতে পারে না নিজেদের মুখ। রাধা
হাসে আর হাসে। তার হাসিতে গড়িয়ে পড়ত সমস্ত জগত। একদিন বাড়ি ফেরার পথে সেই রাধাই ধর্ষিত হয় সহপাঠী দ্বারা। শুধু
ধর্ষণ নয়,ধর্ষণ করে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে
যায় সহপাঠীরা।
বলুন – জয় রাধা।
নারদ
মুনীর কৃষ্ণের কাছে বিচার ও দেবতাদের ক্ষোভ:
এই ঘটনায় কেঁপে ওঠে দেবতালয়। নারদ
মুনী বিচার দেন কৃষ্ণকে। ঘোর কলি ঘোর কলি। কৃষ্ণ- এ রাধার কেমন অবতার। কৃষ্ণ ক্ষেপে ওঠেন। কৃষ্ণের লাল চোখ থেকে বের হতে থাকে
লাভা। সেই লাভায় কাঁপতে থাকে পুরো পৃথিবী।
পৃথিবীবাসীর
মুখে রাধা রাধা নাম:
পুরো এলাকা থেকে আরেক এলাকা, পুরো পৃথিবীতে
চাউর হয়ে যায় এই ঘটনা। লোকজন হায় হায় করতে থাকে। লোকজন হায় হায় বলতে থাকে। মানুষের
চোখে আর ঘুম আসে না। এ রাধার কি হল। লোকজন বলতে লাগল,রাধার সেই সব সহপাঠিরা,যারা রাধাকে ধর্ষন করে হত্যা করেছে, কেউ আর বাঁচতে পারি নি। সেদিন রাতেই
মদ খেয়ে বিষক্রিয়ায় মারা যায় তারা।
বলুন – জয় রাধা।