গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।
শনিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৮
তৈমুর খান
কোনওদিকেই ঘরের দরজা নেই। যখন ঢুকেছিলাম
ছোট্ট একটা সুড়ঙ্গ মনে হয়েছিল। এখন দেখি সেটাও বন্ধ। কীভাবে কে ওটা বন্ধ করল দেখতে পাইনি। মনোরমা আমাকে নিয়ে এসেছে। এটাই নাকি তার স্বামীর গোপন
আস্তানা ছিল। ডাকাতি করতে গিয়ে মারা গেছে তার
স্বামী বিজয়। স্বামীর মৃত্যুর পর সে এখন একা। একমাত্র ছেলে
পূর্ণেশ বাইরে থাকে।
পড়াশোনার কারণেই তার বাইরে থাকা। এখানে এই প্রথম এলাম মনোরমার সঙ্গে। আমাদের দুজনের যে
কথাবার্তা হল :
— কতদিন পর তোমাকে একা পেলাম !
— ঠিক তাই ।
— আমাদের স্কুলজীবনের দিনগুলি মনে পড়ে? কত চিঠি লিখেছি!
— মনে তো পড়েই ! একবার
পালিয়ে যেতেও চেয়েছিলাম! বিয়েটা হল না ধর্ম আর জাত নিয়ে। শুধু কলঙ্ক হল।
— আজ কলঙ্ক সত্যি হবে।
— কিন্তু!
— কিন্তু কী ?
— আমার বউ, ছেলেমেয়ে…..!
— সবাই থাকুক, কারও কিছু
হবে না।
মনোরমা এগিয়ে এসে
জাপটে ধরল আমাকে। ঠোঁটে ঠোঁট ঠেকাল । কী শীতল ওর ঠোঁট ! তারপর আমার কী হল আর কিছুই বুঝতে পারলাম না। কতক্ষণ সেখানে ছিলাম জানি না। হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল।
বাইরে তখন
উজ্জ্বল রোদ উঠেছে। মাঘের কুয়াশা নেই বললেই চলে। আমার ছোট মেয়ে বিনীতা একখণ্ড বরফ হাতে নিয়ে হি হি করে
হেসে যাচ্ছে একটানা।
তাপসকিরণ রায়
ইন্দোর, হ্যান্টেড কাহিনী--১৮
অন্তর্ধান
আমার
বন্ধুর ঘর ছিল ইন্দোর, মধ্যপ্রদেশে। সে থাকতো লোধি মহল্লাতে। ওর ঘর ছিল লোহা মন্দিরের কাছাকাছি। ওই
সময়টা ওরা ছিল ভাড়া বাড়িতে। বন্ধুর নাম মঙ্গল পাল। সে আজ থেকে বছর পাঁচ আগের কথা।
আমি এক ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে ওদের বাড়ি উঠে ছিলাম। ওদের ঘর থেকে লোহা মন্দিরের
দূরত্ব বেশী হলে দেড় কিলোমিটার হবে। জাগাটা তখনও
বেশ নিরিবিলি ছিল। ইন্টারভিউ
দিয়ে রাত কাটিয়ে পরের
দিনই আমার ফিরে যাবার
কথা। রাতে
খাওয়া দাওয়ার পর গল্পগুজব
করতে বসে ছিলাম। বন্ধুর বাবা, তখন তাঁর
নিজের মত করে এ গল্পটা বলে ছিলেন--
আমার সে
দিন হঠাৎ ইমার্জেন্সি ডিউটি পড়ে গিয়েছিল।
এমনি হত, রেভিনিউ
ডিপার্টমেন্টের কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি ছিল। যখন তখন রেড অথবা সার্বেতে যেতে হত।
সে দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ফোন এলো। মিস্টার অমল,
আপনি
তাড়াতাড়ি চলে আসুন। এক ঘণ্টার মধ্যে গাড়ি পাঠাচ্ছি। কি কাজে, কোথায় যেতে হবে তা জানার উপায় নেই। ইমার্জেন্সি কোন কাজ তা বোঝা যাচ্ছে। হতে
পারে যেতে হবে ইন্দোর, আবার ভোপাল, জবলপুর, এমনি কোথাও হতে পারে।
আমি সেদিন
তাড়াতাড়ি তৈরি হতে গিয়ে দেখি, প্রেস করা একটা মাত্র সেট জামা কাপড় আমার আছে। কিন্তু রেডে বা সর্বেতে ক’দিন কোথায় থাকতে হবে তা কে বলতে
পারে ! কি করবো
ভাবছিলাম। লন্ড্রিতে দিলে এক ঘণ্টার মধ্যে পাবার কোন উপায় নেই। স্ত্রীর ওপরেও
একেবারে তিন সেট জামা কাপড় প্রেস করে দাও,
এমন চাপ সৃষ্টি করতে পারি না।
আমার মনে
পড়ে গেলো, লোহা
মন্দিরের পাশেই একটা ঠেলা নিয়ে ধোপা প্রেসের কাজ করতে থাকে। কিন্তু ওর এত রাত
পর্যন্ত থাকার কথা নয়। তবু একবার দেখে নিলে ক্ষতি কি ?
দু মিনিটের তো পথ। আমি আমার কার বের করে তিন-চার সেট জামা-কাপড় নিয়ে
দু মিনিটে সেই ধোপার ঠেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মোবাইল
খুলে দেখলাম, নটা তখনও
বাজেনি। ঠিক আছে চলবে, না হয় আধ ঘনটা পরেই ডিউটিতে পৌঁছলাম। কোন না কোন অজুহাতে
তার এক্সকিউজ পেয়ে যাবো। কিন্তু সমস্যা এটাই
সেই ধোপাকে এত রাতে
পাবো তো ?
ভাবলাম গিয়ে তো দেখি। ইন্দোরের এ দিকটা তখনও পাতলা বসতি
ছিল। এ রাস্তাটার দু পাশে হাল্কা জংলী ঝোপঝাড়,
কোন বসতি ছিল না। কার নিয়ে মন্দিরের কাছে তো পৌঁছে গেলাম।
কিন্তু ধোবি কৈ ? আর তার ঠেলা ! না, ও ঠেলা
নিয়ে নিশ্চয় ঘরে চলে গেছে। ভাবলাম আর কি করবো,
ইস্তিরি বিনা দু এক সেট সঙ্গে নিয়ে নেবো। দেখলাম তৎপর হয়ে
মন্দির বন্ধ করছেন পূজারী। কার থামিয়ে প্রণাম করে নিলাম। ছোটখাটো জিনিস ঠাকুরের
কাছে চাওয়া যায় না, তবু অবচেতন মন কখন যেন চেয়ে বসে, ঠাকুর বাইরে যাচ্ছি, বেশী ভুগিও না যেন !
ফিরে
আসছিলাম ঘরের দিকে। কেন যেন আমার মনে হল মন্দিরের অন্য পাশে কোন আড়ালে ধোপা ঠেলা নিয়ে দাঁড়িয়ে নেই তো ? গাড়ি স্লো করে ফিরে তাকালাম
একবার। চোখ ঘুরিয়ে দেখতে গিয়ে আমার চোখে পড়ল একটা আলো মন্দিরের পাশটাতেই। কেন যেন
মনে হল, হ্যাঁ, এতো ঠেলা বলেই মনে হচ্ছে ! দেরী করলে চলবে না। আমি কার
ঘুরিয়ে স্পীডে এগিয়ে গেলাম। হ্যাঁ, একটু আড়ালে লোকটা ঠেলা নিয়ে দাঁড়িয়ে। ঘরে ফিরে যাবার জন্যেই বুঝি সে তৈরি
হচ্ছিল।
--কি হল--আমি একটু
আগে তো তোমাকে দেখতে পেলাম না ?
--কি যে বলেন বাবু, আমি তো আপনাকে দেখেছি। আপনি পূজারীজীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। আমার ঠেলার পাশ দিয়ে
সাঁই করে বেরিয়ে গেলেন !
ও আমায়
দেখলো আর আমি দেখলাম না, ব্যাপারটা কি ভাবে হল ? না এত ভাবার সময় আমার নেই। বললাম, আমার শার্ট-প্যান্ট
এখনই দিতে হবে, আমি ওয়েট
করছি।
--তা বাবু পনের-বিশ মিনিট তো লেগেই যাবে, আমার কয়লার ইস্তিরি তো।
আমি ওকে
বললাম আমি পনের মিনিটে আসছি, আমার একটু দেরী হলে তুমি আমার জন্যে অপেক্ষা করো কিন্তু !
সায় দিয়ে
ঘাড় নাড়লো লোকটা।
আমি দেরী
না করে ঘরে চলে গেলাম আর মিনিট পঁচিশ পরই আবার এসে উপস্থিত হয়ে গেলাম ধোবীর
ঠেলাতে। অরে ঠেলা রেখে বেটা গেলো কোথায় ? আমার তো অপেক্ষা করার সময় নেই ! দাঁড়ালাম দু মিনিট, তারপর ঠেলার দিকে তাকালাম। এক কোনায় কালী মাখা একটা ভাঙা কাঁচের লন্ঠন টিমটিম
করে জ্বলছিল। দেখলাম কিছু প্রেস করা কাপড় এক সাইডে পড়ে আছে। কাপড়ের রঙচঙ দেখে
আমারই মনে হল। তার মানে প্রেস করেই ও আশপাশে কোথাও গিয়ে থাকবে। কিন্তু আমার অত সময়
কোথায় ? আর মিনিট
খানেক থেকে আমি আমার কাপড় নিয়ে আন্দাজ থেকে কিছু বেশী পয়সা ঠেলার এক কোনায় ছেড়ে
আসলাম। ভাবলাম ধোপা এসে দেখে পয়সা নিয়ে নেবে’খন। গাড়িতে উঠতে যাবো এমনি সময় দেখলাম তিন জন লোক মন্দিরের পাশের রাস্তা দিয়ে
কথা বলতে বলতে আসছে। আমি একটু দাঁড়িয়ে গেলাম। হতে পারে ধোপা এসে গেছে। না, ঠেলার দিকে কেউ গেল না বরং আমার
পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলো তারা। আমি তাদের ডাক দিয়ে বললাম,
আচ্ছা, এই ঠেলার ধোবীকে তোমরা কেউ দেখেছ কি ?
মনে হল
ওরা আচমকা দাঁড়িয়ে গেলো। ওদের মধ্যে থেকে একজন বললো,
কোন ধোবি ?
আমি বললাম--এই যে সামনের ঠেলার ?
লোকটা বলল, ও তো অনেক দিন ধরেই নেই ?
আমি বললাম, না,
ও এসে গেছে, আমি আমার কাপড় প্রেস করালাম ওর থেকে ? এবার লোকগুলি যেন এক সঙ্গে বলে
উঠলো, এটা কি
বলছেন আপনি ?
আমি বললাম, হ্যাঁ,
এই যে আমার গাড়িতে রাখা কাপড় ?
লোকগুলো
প্রায় দৌড়ে এসে আমার গাড়ির কাপড়গুলি পরখ করতে লাগল। এবার ওরা যেন কিছুটা জড়সড় হয়ে
এ ওর দিকে তাকাতে শুরু করলো।
এবার লোকগুলো স্পষ্ট ভাবে বলে উঠলো, সার,
কি বলছেন আপনি ? ও তো ভব ছিল, কবে মরে ভূত হয়ে গেছে ! আমাদের পাড়াতেই ও থাকতো। এক্সিডেন্টে আজ ছ মাস প্রায় হল মারা গেছে !
আমি বললাম, তা কি করে হয়, তোমরা এস আমার সাথে আমি এই মাত্র
ওর ঠেলায় পয়সা রেখে এসেছি। আমি কৌতূহলী ছিলাম,
ওদের কথা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তাই ওদের অনিচ্ছা
সত্ত্বেও নিয়ে গেলাম ঠেলা দেখাতে। কিন্তু কৈ,
ঠেলা কৈ সেখানে ? আলো নেই, ঠেলা নেই, ধোবী নেই, কিছু নেই সেখানে !
আমি জোর
দিয়ে বললাম, এইখানে
ছিল ঠেলা--
লোকগুলো
ভয়ে ভয়ে বলে উঠলো, আর এখানে থাকবেন না, সার ! ওর ভাঙা
ঠেলা তো মন্দিরের পেছনে অনেক দিন ধরে পড়ে আছে। যাতায়াতে আমরা অনেকবার দেখেছি।
আমি
কিছুতেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না, আপন মনে বলে উঠলাম, ওর ভাঙা ঠেলা ? ওই মন্দিরের পেছনে আছে ? সচেতন হয়ে বললাম, চলো তো একবার দেখবো, তা না হলে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না !
--আমরা যেতে পারবো না সার, আমরা যাচ্ছি।
আমিও ভয়
পাচ্ছিলাম বই কি। তবু মনে হল একবার দেখে যাই,
সত্যি ওর ভাঙা ঠেলা মন্দিরের পেছনে পড়ে আছে কি না। আমি ওদের রিকোয়েস্ট করলাম, তোমরা না হয় এখানেই একটু দাঁড়াও, আমি উঁকি মেরে ভাঙা ঠেলাটা একটু
দেখে আসি।
ওরা
অনিচ্ছা সত্ত্বেও দাঁড়ালো। আমি দ্রুত এগিয়ে মন্দিরের পেছনের দিকে উঁকি মারলাম। হ্যাঁ, দেখলাম, ভাঙাচোরা একটা ঠেলার ছায়া-আদল সেখানে দাঁড়িয়ে আছে বটে !
আর না।
আমার অনেক দেরী হয়ে গেছে। আমায় লোকগুলো বলল,
সার আমাদের একটু এগিয়ে দেবেন,
তিন জন হলেও আমরা ভয় পাচ্ছি--
আমি
তাড়াতাড়ি ওদের পেছনের সিটে তুলে নিলাম। অবশ্য মনে একবার সন্দেহ হয়েছিল বটে এই ভেবে
যে এই লোকগুলো যারা আমার গাড়ির পেছনে উঠে বসলো,
তারা আবার অশরীরী আত্মা নয় তো !
না, সেদিন ওদের আমি আমার বাড়ির
সামনেই সশরীরে নামিয়ে দিয়েছিলাম।
সুবীর কুমার রায়
দীর্ঘক্ষণ খদ্দেরের
আশায় তার ভাঙাচোরা ট্যাক্সিটা
নিয়ে অনুকূল অপেক্ষা করে
গাড়িতে উঠে ইঞ্জিন চালু
করতে যাবে, এমন সময়
তিনজন সাধু গোছের মানুষ
তার কাছে এসে হাজির
হয়ে জিজ্ঞাসা করলো “নিউ
আলিপুর যায়গা”? অনুকূল সম্মত হয়ে
গাড়ির মিটার ডাউন করলো।
তিনজনের পরনেই অদ্ভুতভাবে পরা
ধবধবে সাদা ধুতি, সাদা
চাদর, মাথায় গেরুয়া রঙের
পাগড়ি, কপালের ওপর থেকে
ভ্রু পর্যন্ত চওড়া কমলা
রঙের সিঁদুরের টিপ, গায়ে
তীব্র আতরের গন্ধ।
“নিউ আলিপুরের কোথায়
যাবেন”?
“লক্সমীনারাণ্ প্যালেস
যায়গা। তুমে মালুম হ্যায়
ও মকান কিধার হ্যায়”?
“বুঝেছি, ওই তিনতলা
যে বড় বাড়িটা দীর্ঘদিন
ধরে তৈরি হচ্ছে তো”?
যাওয়া আসার পথে সে
অনেকবার বাড়িটা লক্ষ্য করেছে।
যেকোন লোকের বাড়িটার ওপর
নজর যাবেই। বড় রাস্তার
ওপর পাঁচিল দিয়ে ঘেরা
প্রায় চার কাঠা জমির
ওপর রঙিন মার্বেল মোড়া
বাড়িটা নজর পড়তে বাধ্য।
“সহি পহচানা, লেকিন
উও মকান তৈয়ার হো
গয়া। আজ গৃহপ্রবেশ হ্যায়।
হাম তিন আদমি পূজাপাঠ
আউর যজ্ঞ করনে কে
লিয়ে রাজস্থান সে ইধার
আয়া হ্যায়। জানতা হায়
ইসি লিয়ে কিতনা রুপিয়া
হামলোগোকো মিলেগা?
আইডিয়া তো করো। হাম
লোগোকো আশশি হাজার রুপিয়া
ইসি কাম করনেকে লিয়ে
মিলেগা, আশশি হাজার,
প্রণামি আলাগ”।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও
অনুকূল স্বগতোক্তি করলো আআআশিইই
হাআআজাআআর!
“আশশি হাজার বহুত
যাদা হো গিয়া কেয়া?
জানতা হায় উসি এরিয়া
মে চার কঠ্ঠা জমিনকা
ভাও কিতনা? ও মকানকে
লিয়ে লক্সমীনারাণ ঝুনঝুনওয়ালা সাহাব
কিৎনা রুপয়া খরচ কিয়া?
নও কোরোর রুপয়া। নও
কোরোর রুপিয়াকা মকানকা পূজাপাঠকে
লিয়ে আশশি হাজার রুপয়া বহুত
যাদা হো গিয়া কেয়া”?
অনুকূল কথা
না বাড়িয়ে চুপ করে
গাড়ি চালিয়ে একসময় নির্দিষ্ট
বাড়ির খোলা গেটের ভিতর
দিয়ে প্রবেশ দ্বারের কাছে
গাড়ি দাঁড় করালো।
প্রবেশ দ্বারের
কাছে বহু লোকের ভিড়,
কিন্তু পরিবেশটা যেন কিরকম
থমথমে। একজন সাধু কত
ভাড়া উঠেছে জিজ্ঞাসা করায়
অনুকূল জানালো “দুশ’ পঁচাশি
রুপয়া”। সাধুটি তিনটি একশ’
টাকার নোট
দিলে সে একটা দশ
টাকার নোট ও একটা
পাঁচ টাকার কয়েন ফেরৎ
দিল। সাধুটি একটু সময়
নিয়ে “ইয়ে রাখ দেও”
বলে পাঁচ
টাকার কয়েনটা তাকে ফেরৎ
দিল।
অনুকূল গাড়ি
ঘুরিয়ে ফিরে আসার সময়
বাড়ির ভিতর থেকে হঠাৎ
তীব্র কান্নার আওয়াজ শুনে
দাঁড়িয়ে গেল। জানা গেল
গতকাল গভীর রাতে বাড়ির
মালিক লক্ষ্মীনারায়ণ বাবু হৃদরোগে
পরলোক গমন করেছেন। আজ
তাই আর গৃহপ্রবেশ হচ্ছে
না। শুধু তাই নয়, প্রথম দিনই
এই অঘটন ঘটায় তাঁর
স্ত্রী ঊমা দেবী নিশ্চিত, যে এই
বাড়ির কোন বাস্তুদোষ আছে।
তিনি আর কোন ঘটনা
ঘটার আগেই আগামীকালই এই
বাড়ি ছেড়ে দেশে ফিরে
যেতে চান। যে প্রোমোটারকে দিয়ে
বাড়িটা তৈরি করানো হয়েছিল,
তাঁকেই বাড়িটা বিক্রি করার
দায়িত্ব দিলে, তিনি একমুহুর্ত সময়
নষ্ট না করে জলের
দামে বাড়িটি কিনে নেওয়ার
চুক্তি করে এক কোটি
টাকার একটি চেক অগ্রিম
হিসাবে ঊমাদেবীকে দিয়েও দিয়েছেন।
অনুকূলের আজ
আর খদ্দেরের অভাব নেই,
তার ট্যাক্সিতেই ওই তিনজন
আবার আগের জায়গায় ফিরে
চললেন। তাদের মুখে আর
সেই হাসির রেশ নেই।
সেটা লক্ষ্মীনারায়ণ বাবুর মৃত্যুর
জন্য, না আশশি হাজার
রুপয়া হারানোর জন্য বোঝা
গেল না।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)