গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

রুখসানা কাজল



 ঘর গেরস্থালী 
  
              লাউ কুমড়োর  মাচান পার হয়ে   কাঁটাতারের বেড়ার ধার ঘেঁষে দাঁড়ায়  দীপালি। নতুন বাড়ি  করেছে কেউ। কলাগাছ রুয়ে রুয়ে মাটিকে বেঁধে   রেখেছে। কলাও ধরেছে অনেক। আনাজকলা। মোচার বেগুনি মুখে মাকড়শারা জাল  বুনেছে। জালের ঠিক কেন্দ্রে  একটি বড় মা মাকড়শা হাত পা আকড়ে ধরে রেখেছে সাদা গোল বলের মত বাচ্চাদের আশ্রয়টিকে। আরো কিছু দূর হেঁটে আসে ও । আচমকা আনন্দে চোখে  জল এসে পড়ে। মান্দার গাছটি এখনো আছে। কত ফুল কুড়িয়েছে ওরা । আগুন হয়ে জ্বলত গাছটি। সারাদিন ফুল পাখির মেলা বসত গাছের  উপর। আর নিচে হই হই করে দিপালীরা খেলত। মান্দারের ফুলে মালা গাঁথে না  কেউ । পূজাও দেয় না। ঘর সাজাতেও কেউ তুলে নেয় না। তাই খেলে ছিঁড়ে গাছতলাতেই ফেলে রাখত ওরা সবাই। 
      
               মুস্তারিদের বাড়ি দেখা যাচ্ছে এবার। দিপালী বাংলাদেশে থাকতেই  বিয়ে  হয়ে যায় মুস্তারির। তখন সবে ক্লাশ নাইন। এই প্রথম কোনো বান্ধবীর বিয়ে হল। মুস্তারির স্বামী ছিল ডাকাত ডাকাত চেহারার আলাম এক ব্যাটাছেলে। দুবাই থাকত। কোনো এক নামকরা কোম্পানীর ড্রাইভার । মুস্তারির বিয়েতে দারুণ মজা করেছিল বান্ধবীরা মিলে।মোটা মোটা ভারী গয়না দেখে তো সবাই অবাক। দীপালিরা    সব বান্ধবী একেক বার পরে দেখেছে। কি ওজন ! অনেক সোনা দিয়ে বানানো।  খুব গর্ব করে  মুস্তারি বলেছিল ওর বরের কোম্পানীর যেঁ মালিক সেই শেখ নাকি উপহার দিয়েছে । জীবনে প্রথম মুস্তারির শাড়ি গয়না পরে ওরা চার বান্ধবী নির্মল কাকুর স্টুডিয়োতে ছবি তুলে এসেছিল। মুস্তারি তাদের চিকেন বিরিয়ানীর সাথে দইবড়া খাইয়ে লাল ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে বলেছিল, এই আরো টাকা আছে রে । চল সিনেমা দেখি।” 

              বাচ্চা হতে গিয়ে মরে গেছে সেই মুস্তারি। হাবড়ার রেল লাইনের ধারে বস্তির ঘরে খবরটি পেয়ে খুব কেঁদেছিল দীপালি। বেঁচে থাকলে একদিন না   একদিন দেখা হতই। আর কোনদিন দেখা হবে না সরল মনের ফর্সা রঙ্গা মেয়েটির সাথে। মুস্তারিদের সাদা উঠোন দিয়ে কয়েকজন মহিলা হেঁটে গেল। তারা কেউ দীপালিকে চেনে না। দীপালিও কাউকে চিনতে পারে না। সবুজ রোদ্দুরে অবুঝ হয়ে কেঁদে ফেলে দীপালি। মুস্তারি বেঁচে থাকলে এতক্ষণে ওদের বাড়ি ঘুরে ধুমসে আড্ডা দেওয়া যেত ।  

               রান্নাঘরের পেছনে এসে উঁচু গলায় ডাক দেয় নমিতা পিসী , ও দীপু তুই কোহানে?” চোখ মুছে কোনো কথা না বলেই আস্তে ধীরে হেঁটে আসে দীপু। পিসী যেন ষড়যন্ত্র করছে এমনভাবে বলে উঠে , শোন সন্ধ্যাকালে নিতাই  আসপেনে। গা ধুয়ি ভাল করি সাজিগুজি থাহিস তো ।” পিসীর বাড়ির দক্ষিন পাশে  সেই নতুন বাড়ির  কাঁটাতারের বেড়া  ধরে এক হাসিমুখের বৌ পিসীকে হাতছানি দেয়,  ও কাকিমা কিডা মাইয়েডা?”  পিসীমা  খুশী খুশী মুখে দীপুর হাত ধরে এগিয়ে আসে, আমার ভাইয়ের মাইয়ে। দীপালি সাহা।” তারপর গলা নামিয়ে ফিসফিস করে বলে,  কলকাতা থন আইছে বুঝছ আশরাফের বউ। দেহি কিছু গতি করতি পারি কিনা।” বউটি দীপালির দিকে ভাব জমানোর মত তাকিয়ে বলে, আমাগের মাধব খারাপ কিসের কাকিমা? তুমি কও তো শামিমের আব্বারে দে কথা পাড়ি !” পিসী সংশয়  নিয়ে জানায়, দেওয়া থুওয়া যে জুতের হবে নানে বৌমা । ওর বাপ মরিছে তিন  বছর আগি। ভাইরা ছোড। ফুটপাতি কাটাকাপড়ের ব্যবসা করি কোন করমে বাঁচি আছে। মাধবদের অবস্থা ভাল। অনেক পণ চাবিনি লিচ্চয়।” বৌটি দীপালির হাত ধরে টেনে নেয়, আসো ভাই আমাগের বাড়ি ঘুরি যাও। ও কাকিমা তুমিও আসো ।” পিসী না বলে। দীপালিকে আজান পড়লেই ঘরে আসতে বলে চলে যায় কাজে।
   
             এই বাড়িটি আগে ছিলো না। ফাঁকা পড়ে ছিল জায়গাটি । দীপালিদের খেলার জন্যে বিকেল হতেই বুক পেতে চেয়ে থাকত। সামনেই ছিল একটি বাঁকানো আমগাছ ।  তার নিচে সামান্য সিমেন্ট বাঁধানো চাতাল । সেখানে দীপালিরা রান্নাবাটি খেলা খেলত। প্রাইমারী ইশকুলের হেডমাস্টার  মনোজ দত্তের পৈতৃক বাড়ি। এদের কাছে বিক্রি করে মধ্যমগ্রামে বাড়ি করে চলে গেছে দত্তরা। খুব সুন্দর বাড়ি করেছে এরা। বড় বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করে আশরাফ ভাইরা। অনেক বড় দোকান।  ঘর দোর উঠোনে স্বচ্ছলতা ঝকঝক করছে। পাজামা পাঞ্জাবী পরা আশরাফভাই কি যেন ইশারায় বলে বাইরে গেল।

             দীপালির হাত ধরে হাসে বউটি, প্রথম এলে আমাগের বাসায় । একটু মিষ্টি মুখ না করালি কি চলে বলো।” দীপালি  লজ্জা পায়। কি যে বলেন ভাবী। এই চা ই বেশ।” ধবধবে সাদা কাপে রজনীগন্ধা ফুলের ছবি আঁকা। দীপালির কেমন আপন আপন লাগে সবকিছু। অথচ ছয় বছর আগে  একদিন এদের ভয়ে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছিল। মুসলমানদের হাতে মেয়ের ইজ্জত থাকবে না ভেবে রাতের অন্ধকারে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিল বাবা মা ছোট দুটি ভাইকে সাথে নিয়ে।  দীপালির বাবা ছিল ইশকুলের পিয়ন। সাত পুরুষের ভিটা ছেড়ে এক মূহূর্ত লাগেনি দেশ ছাড়তে। জব্বার সিকদারের বড় ছেলেটি দীপালিকে চিঠি দিয়েছিল। ইশকুলে যাওয়ার পথে চেক শার্ট ছেলেটি দাঁড়িয়ে থাকত তেমাথায়। কথা বলার চেষ্টা করত। সাহা স্টোর্সের মন্মথ  সাহা দীপালির বাবাকে  ডেকে বলেছিল, ওরে ও পীতাম্বর জাত খোয়ানির ইচ্ছা হইছে নাকি তোর? সেয়ানা মাইয়া  এমন ছাড়া গরুর মত ছাড়ি দিছিস তা মুসলমানের ছেলের তো খাতি সাধ হবে নে। ওগের তো হাত পা মুখ সর্বত্ত্রর লিঙ্গ ঝোলে জানিস না তুই?”  

             দীপালির ইশকুল যাওয়া বন্ধ হল। কদিন বিয়ের চেস্টায় ঘটকের আনাগোনা  বাড়িতে লেগে থাকত। কিন্তু  তাদের পণের দাবীর মুখে পীতাম্বর কিছুতেই দীপালির বিয়ে দিতে পারল না। শেষে মন্মথ সাহা বুদ্ধি দিল, ইন্ডিয়ায় চেস্টা কর। আখেরে আমাগের তো এই দেশ ছাড়তিই হবি নে। তা মেয়ের বিয়ে দিয়ে একঘর আত্মীয় করি রাখ কেনে আগি থাকতি।”  সেই বুদ্ধির সাথে নিজেদের বুদ্ধি  যোগ করে দীপালির বাবা মা দেশ ছাড়ল। ভিটেমাটি কিনে নিলো মন্মথ সাহা। ভাল দাম দিয়েছিল। কিন্তু অজানা অচেনা দেশে আধচেনা মানুষদের সাথে থাকতে গিয়ে পীতাম্বর দেখল সে  টাকা কিছুই না। সে ভেবেছিল ইন্ডিয়া গেলেই কিছু না কিছু কাজ পেয়ে যাবে। শুনেছিল সবকিছুই সস্তা সেখানে। প্রথমে হাবড়ায় দুই রুম ভাড়া নিয়ে তিন ছেলেমেয়েকেই ইশকুলে ভর্তি করে দিয়েছিল । ছ মাসের মাথায় কাজ যখন পেলো না তখন বুঝতে পারল এবার এক টুকরো জমি কিনবে বলে যে টাকা রেখেছিল তাতে টান পড়বে। খুলনা থেকে যাওয়া এক পরিবারের সাথে ভাব হল। তারাই জানালো,  দাদা এখানে কাজ পাওয়া দুস্কর। ছেলেমেয়ে পড়ানো আরো কঠিন।  জমানো টাকা শেষ হলি কিন্তু রাস্তায় থাকতি হবিনে।  তার চে এখনই রেলের জমিতে ঘর তুলি চলি আসেন। বিনি পয়সায় মাথা গোঁজার ঠাই পালি কাজ জুটি যাবে নে কোন না কোনভাবে ।”  

              সেই শুরু রেলের বস্তিতে থাকা। ছেলেরা ইশকুলে যায় না। সারাদিন ঘুরে ঘুরে পেট ভরার কৌশল শিখে ফেলে। দীপালি ইশকুল ফাইন্যাল পাশ করে কোনমতে । বস্তির ঘরের দুটি বাচ্চা পড়ায় আর ইয়ার দোস্তি করে বেড়ায়। পীতাম্বর এখন বিয়ের কথা ভয়ে মুখে আনে না। কেবল বউ যখন অন্য বাড়ির কাজ শেষে বস্তির ঘরে ফিরে আসে  দুজন মিলে পুব আকাশের তারা দেখে। কেউ কোনো কথা বলে না। যেন সব কথা শেষ । কেবল দুজনের মন একই ভাবনায় সজল হয়ে থাকে। নিঃশব্দে খুঁজে ফেরে পুব দিকের কোনো তারার দেশে তাদের ভিটেমাটি ঘর ।   এক টুকরো উঠোন ছিল। ছোট হলেও কলা গাছের বাগান ছিল। কাজলী ধবলী নামে দুটি গরু ছিল। তার বউ তখন ঝি ছিল না । বৌদি বলে ডাকত পাড়াপড়শি  সবাই। সেখানে এরকম সাদা ধূলো মাখা রোদ্দুর ছিলনা । জীবন বড় সবুজ ছিল । আনন্দ ছিল, হাসি ঠাট্টা গান ছিল । সঙ্গমের আগে শরীর থেকে সবুজ সোঁদা মউ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ত। এখন পীতাম্বর আর শরীর চায় না। বউও না। কেবল ঘাপটি মেরে পড়ে থাকে একেকটি দিন রাত পার করার ধান্ধায়।  

              দীপালির বাবার নরম শরীর। বাংলাদেশের কাঁচামাটিতে আরামে থাকা মানুষটি  এদেশের রোজ খাটুনি সইতে পারেনা । দীপালির জন্যে পালিয়ে আসা কিন্তু এখানেও কোনো হিল্লে করতে পারেনি তারা। মুখে সাম্যবাদ অন্তরে জমি জিরাত টাকার স্বপ্ন। মেদিনীপুরের এক সম্বন্ধ এসেছিল । দীপালিকে পছন্দও করেছিল। পণের জন্যে সেই বিয়ে ভেঙ্গে গেলে তারা চিবিয়ে চিবিয়ে বলেছিল, শুনেচি বাঙ্গালরা সবাই জমিদারী ছেড়ে এয়েছে। তা পণের টাকা দিতে গলা শুকিয়ে গেল যে!”  অপমানের আগুনে পুরানো কাপড়ের মত ঝলসে যায় পীতাম্বর। একদিন বন গাঁ থেকে ফিরে বুকে ব্যাথা উঠল । সামান্য সময় দিয়ে মরে গেল সোনার বাংলা বালক বিদ্যালয়ের সাদাসিধে পিয়ন পীতাম্বর সাহা। তার ছাই, অস্থি আর নাভিকুন্ড পেল অন্য দেশ অন্য নদী । দাহ করে ফেরার পথে ছোট দুই ভাই মদ খেয়ে পড়ে রইল বস্তির ক্লাব ঘরে।
                   
               ততদিনে পতাকার রঙ বদলে গেছে। কাস্তে হাতুড়ি প্রস্ফুটিত হয়ে পদ্ম ফুটেছে। বস্তির ঘরে নেতা গোছের একজন সান্ত্বনা দিতে দিতে হাত থেকে পিঠ, কোমর তারপর কি করে যেন দীপালির দেহের ভেতর ঢুকে গেল। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ভেবে এমনিতে ত সবসময় কাঁপে দীপালি। এবার বাবাকে হারিয়ে আরো বেশি কাঁপছিল কান্নার দমকে। শেষ মূহূর্তে যখন বুঝতে পারল তখন দীপালির শরীরের উপর অন্য একটি শরীর কেঁপে থেমে গেল আনন্দ আর সুখের আর্তনাদ করে। যাওয়ার আগে বিছানায় টাকা রেখে দরাজ গলায় বলে গেল, ওষুধ কিনে খেয়ে নিস অবাঞ্ছিতের ভয় থাকবে না । আর মিটিং এ আসিস। মেয়েদের জন্যে আমরা নতুন কর্মসূচী শুরু করতে যাচ্ছি জানিস তো।” সেই শুরু । তারপর সময় সুযোগ  পেলেই আসতে থাকে কাজ দেওয়ার অছিলায়। দীপালির মা ঘরে থাকলে আহলাদি   গলায় দাঁড়িমুখো দামড়াটা খোকা সেজে আবদার করে, মাসী চা কর গো। আমি প্রাইভেটলি দীপুর সাথে একটু কথা সেরে নিই।” কারোর কিছু বলার ছিল না। কোন দেশে পালাবে এবার দীপালিরা  ?  

                পূজো দেখার নাম করে দীপালির আবার বাংলাদেশে ফেরা। পিসীই ব্যবস্থা করেছে সোনার বাংলা বালক বিদ্যালয়ে কোন কাজের। ডিজিটাল বাংলাদেশের একদিকে মালাউন খেদাও যখন তখন। অন্যদিকে কাজকর্ম চাকরি বাকরি করে বেশ আছে কিছু হিন্দু সম্প্রদায়। স্বপ্নের মত লাগছে দীপালির। মাত্র পনের দিনের কথাবার্তায় মাধবের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। বিয়ের খর্চা বাবদ মাত্র ত্রিশ হাজার টাকা পণে রাজী হয় মাধব।  সব আয়োজন করছে পাশের বাড়ির আশরাফ ভাই আর তার বন্ধুরা। মাধব উনার দোকানের কর্মচারী। ভল্লুকের মত চেহারা। কালো, রোমশ শরীর। এমনকি নাকের ভেতরের লোম পর্যন্ত বেরিয়ে আছে। ঘিনঘিনিয়ে উঠলে মুস্তারীর ডাকাত দেখতে স্বামীর কথা মনে পড়ে যায়। দীপালির মনের অবস্থা বুঝতে পেরে আশরাফ ভাইয়ের বউ কাছে নিয়ে বোঝায়, বোন গো চেহারাই সব নয়। ঘেন্না পিত্তি করে সংসার শুরু কর। দেখবা কেমন মায়া পড়ে যাবে নে। জীবন হল পুকুরের মত। তুমি রাখলে জলকলমি না রাখলে ভূইকলমী।”  বিয়ের দিন ঠিক হতেই মা ভাইরা এসেছে। পুবের বারান্দায় বসে থাকে মা। নীল পাড়ের সাদা সস্তা শাড়িতে গা ঢেকে রোদ তাপায়। দীপালি বোঝে মার মনে ঘুরে ঘুরে ফিরে আসছে নিজেদের ভিটা বাড়ির যাপিত ছবি।  
  
               সন্ধ্যে বেলায় ভাইরা এসে খুশী খুশী গলায় জানায় দিদিরে দিদি মাধবদাদের এত বিরাট শরিকি পাকা বাড়ি। পুকুরও আছে। মাধবদা নিজেই নারকেল পেড়ে খাওয়ালো।” ছোট ভাইটা হাসতে হাসতে জানায়,  দিদি নারকেল কাটতে গিয়ে আঙ্গুল কেটে ফেলেছে তোর মাধব। সে কি রক্তারক্তি কান্ড।” লজ্জা পায় দীপালি। একটু মায়াও হয়। আহারে কতখানি না জানি কেটেছে !যদি জানা যেত! কি দরকার ছিল নারকেল কাটার ? ভল্লুকের মত দেখতে মাধবকে মনে মনে খুব বকে দেয় দীপালি। তালগাছ বিছানো মাধবদের পুকুরঘাটে এক বোঝা এঁটো থালাবাসন ধুতে ধুতে সে মাধবকে বলে, হ্যাগো কতখানি রক্ত ঝরল বল দিকিনি ! মাধবও উত্তর দেয় পথের কাঁটায় পায়ে রক্ত না ঝরালে --- দীপু উ উ উ, দিদিইইইই – আশরাফ ভাইয়ের দোকান থেকে অনেকগুলো বিয়ের শাড়ি পাঠিয়েছে মাধবদা। এখুনি দেখে পছন্দ করে জানাতে বলেছে----কুইক  দিদি ---