গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শনিবার, ১ জুন, ২০১৩

ইন্দ্রানী সেনগুপ্ত

মাধু এবং মাধবী

আঁতুড়ঘর থেকে গোঙানির শব্দ আসে অবিরত। হরিদাস মুখুজ্জে পায়চারি করতে থাকে বাইরে। বিমলার মা বাসন মাজছে কলতলায়, বিধবা পিসি উনুনের থেকে কিছুটা দূরে পিড়িতে বসে ক্রমাগত নির্দেশ বর্ষণ করে চলেছেন ঝাঁজালো কন্ঠস্বরে নির্দেশপ্রাপক একটি বছর দশেকের মেয়ে, মহিলা বলাও মন্দ নয়। কারণ পূর্ণবয়স্কা এক মহিলার সাংসারিক প্রায় সমস্ত দায়িত্বই পালন করতে হয় তাকে। আপাততঃ রন্ধনকার্য চলছে, আর কতটা কি ফোড়ন-মশলা দিতে হবে, সেই ব্যাপারেই নির্দেশ দিচ্ছেন হরিদাসের বিধবা পিসি উনুন থেকে বেশ কিছুটা তফাতে বসে, ছোঁয়াচ লেগে যাওয়া আবার ঘোর অমঙ্গলের চিহ্ন। মেয়েটির মা, তথা হরিদাসের স্ত্রী মালতিদেবি, এই মুহূর্তে আঁতুড়ঘরে বন্দি দাইমায়ের তত্ত্বাবধানে গোঙানির আওয়াজ থেমে যায় হঠাৎ, ‘মা গো’ বলে একটা আর্তনাদ, তারপর নিস্তব্ধতা কিছুক্ষণের বিমলার মা উঠে দাঁড়ায় বাসন ফেলে পিসি ঝুঁকে পড়ে তাকান আঁতুড়ঘরের দিকে হরিদাস পায়চারি থামিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে দরজার কাছে মেয়েটি ভয়ার্ত চোখে একবার ঠাকমার দিকে, আর একবার বাবার দিকে তাকায়, সামনের উনুনে ডাল ফোটে, নাড়তে ভুলে যায় মেয়েটি এবার চিলচিৎকারের পালা চলতে থাকে মিনিট দুয়েক। দাইমা বেরিয়ে আসে আঁতুড়ঘরের দরজা খুলে। ‘না-সূচক’ মাথা নাড়া দেখেই বুঝে যায় সবাই, এবারেও লাভের খাতা শূন্য। আবার যে যার কাজ শুরু করে দেয় পূর্বরূপ। হরিদাসই কেবল জুতোজোড়া পায়ে গলিয়ে হনহন করে বেরিয়ে যায় সদর দরজা দিয়ে। পিসি হঠাৎ করে যেন আশাহীনতায় মুষড়ে পড়েন – ‘সবই কপাল, বুঝলে বিমলার মা, সবই কপাল। নাহলে, আমার হরির ভাগ্যেই বা এমনধারা মেয়েমানুষ জুটলো কেন বলতে পারো! কেন যে মরতে এটাকে ঘরে তুলেছিলাম তা ভগবানই জানেন। পাঁচ-পাঁচটা  মেয়েছেলে একের পর এক। একটাও বেটাছেলের মুখ দেখলাম না, এবার কি বাপের বংশ নির্বংশ হবে ! ভাবতেও বুক কাঁপে। হারামজাদী মাগিটা আমাদের কপালেই এসে জুটল। বিধবা এই মানুষটি হঠাৎ করে বাপের বংশকেই নিজের বংশ মনে করে শোকপালনে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন বছর দশেকের মেয়েটি বুঝতে পারে না বিশেষ কিছু, কেবল এটুকু বোঝে যে সমস্ত ঘটনার জন্য দায়ী তার মা এবং ঘটনাটি হল তার আরো একটি বোন হয়েছে। তবে বংশ বংশ বলে ঠাকমা যে তার মা’কে শাপ-শাপান্ত করছে, তার বিন্দুবিসর্গ কারণ সে অনুধাবন করতে পারে না। কিছুটা দ্বিধা, সাথে বোন হওয়ার আনন্দ, আর তার সাথে মায়ের জন্য কিছুটা দুঃখবোধ একত্রিত হয়ে চোখ ছলছল করে ওঠে মেয়েটির। হঠাৎ চোখ পড়ে কড়াইয়ের দিকে। ডালটা ফুটছে কখন থেকে। খুন্তিটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করে আবার । 
 
বেলা দেড়টা বাজে প্রায়। রান্নাবান্না সব শেষ। ঠাকমা গেছে পুকুরপাড়েবিমলার মা চলে গেছে কাজ সেরে। আঁতুড় ঘরের দরজাটা ভেজানো, দাইমাও চলে গেছে। নিঝুম বাড়িটাতে মেয়েটা একা, বসে আছে উঠোনের মাঝে। একএকবার মনে হচ্ছে আঁতুড়ের দরজাটা ঠেলে যায় মায়ের কাছে, কিন্তু কেমন যেন ভয় ভয় করে। মনে হয়, এই মুহূর্তে তার যাওয়াটা অনুচিত, কেন? তা সে বোঝে না। ঠাকমা ফিরে আসে ঠিক এই সময় – ‘যা রে মাধু, স্নানে যা, বেলা হল অনেক। বাকিগুলো সব আসেনি এখনও নাকি !’
-‘না গো ঠাকমা, কেউ তো ফেরে নি’
-‘সব এক একটা হয়েছে বটে ! মরলেও তো হাড় জুড়ায়’

মাধু আর কথা বাড়ায় না। কাপড় নিয়ে এগিয়ে যায় ঘাটের দিকে। স্নান সেরে, কাপড় ধুয়ে যখন বাড়ি ফেরে তখন বাড়ি একেবারে সরগরম। ছোট তিনটে বোন কুয়োর পাড়ে লাফালাফি করে জল ঢালছে গায়ে। বাবা গুম মেরে বসে আছে দাওয়ায়। ঠাকমা খানিকটা তফাতে বসে কথা বলছে বাবার সাথে
-‘হরি, আর অমত করিস না। বংশ যে এবার নির্বংশ হওয়ার জোগাড়। চেষ্টা তো কম করলি না। এ মাগি অলক্ষী ! এবার লক্ষ্মী আন ঘরে!’

হরি গুম মেরে বসে থাকে, কোন উত্তর করে না। মাধু তাড়াতাড়ি করে উঠোনে কাপড় মেলে দিয়ে পাত পাড়ে বাবার জন্য। হরিদাস মুখুজ্জে গম্ভীর চিন্তান্বিত মুখ নিয়ে বসে খেতে। হরিদাসের পিসিও উঠে পড়ে এবার। বেলা অনেক হল। দুটো চাল ফুটিয়ে নিতে যায় নিজের ঘরে। বাবাকে যত্ন করে খাওয়ায় মাধু তারপর তিন বোনকে নিয়ে খেতে বসে রান্নাঘরের মেঝেতে।সবক’টার খাওয়া হয়ে গেলে খাবারের থালা গুছিয়ে নিয়ে মায়ের ঘরে যায় সন্তর্পণে। ভেজানো দরজাটা খুলে ঘরে ঢোকে মা শুয়ে আছে মেঝেতে একটা পাতলা চাদরের ওপর, নিস্তেজ হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে বোধহয়। পাশের বাচ্চাটিও ঘুমোচ্ছে অকাতরে। মাধু বাচ্চাটাকে দেখে বেশ কিছুক্ষণ ধরে, তার আরও একটা বোন। মজা লাগে মাধুর, ওর কচি হাতের পাতা দেখে মুখটা টকটকে লাল। ধরতে ভয় হয়। মনে হয় যেন পারবে না ঠিকমত নিতে ভাতের থালা নিয়ে মায়ের পাশে গিয়ে বসে। মুখটার দিকে তাকিয়ে কেমন যেন মায়া হয় মাধুর। এই তার মা, তাদের পাঁচ বোনের মা।আর ঠিক এই কারনটাতেই সবাই মা-কে গালাগাল করে, কটূকথা বলে সারাদিন।  এমন কেন হয়, তা সঠিক জানেনা মাধু। শুধু এইটুকুই জানে, মায়ের বড় কষ্ট, আর এই যে বোনটা এল মায়ের কোলে, তাকেও সবাই অবহেলার চোখেই দেখবে, তাদের চার বোনের মত। বড় দুঃখ হয় মাধুর মায়ের জন্য আর ঐ নতুন বোনটার জন্যও। মায়ের দিকে ঝুঁকে পড়ে মাধু, কানের কাছে মুখটা নিয়ে মাকে ডাকে আস্তে করে। তিনবার ডাকার পরে চোখ মেলে তাকায় মা। হাসে একটু আলতো করে। মা’কে ধরে উঠে বসায় মাধু দেওয়ালে হেলান দিয়ে। ভাতের গ্রাস করে খাইয়ে দেয় আস্তে আস্তে। কোন কথা বলে না মা, বাধ্য মেয়ের মত খেয়ে নেয় পুরো ভাতটা। খাওয়া হয়ে গেলে মাধু মায়ের মুখ পরিষ্কার করিয়ে দেয়, তারপর আবার শুয়ে দেয় মেঝেতে পাতা চাদরটার ওপর। থালাটা নিয়ে উঠে পড়ে মাধু। হঠাৎ করে মা চেপে ধরে মাধুর হাতটা
-      ‘একটু বোস মাধু’
-      ‘কি হয়েছে মা?’
-      ‘খেয়েছিস তোরা সব ?’
-      ‘হ্যা, সব্বাইকে খাইয়ে দিয়েছি’
-      ‘তুই খেয়েছিস তো ?’
-      ‘হ্যা, সে তো খেয়েছিই’
-      ‘আজও তোর ইস্কুলে যাওয়া হল না মাধু। আঁতুড় না কাটা অবধি তো যাওয়াও হবে না মাস্টারমশাই তোকে খুব বকে, না রে !’
-      ‘না মা, বকে না তো ! মাস্টারমশাই তো জানে, তোমার অসুখ !’
-      ‘রাতে একটু পড়তে বসিস মাধু তোর পরীক্ষার তো দেরি নেই বেশি এবারেও ভাল ফল করতে হবে কিন্তু
-      ‘মা আমি রাতে পড়ি রোজ কিন্তু বেশিক্ষণ জেগে থাকতে পারি না বড্ড ঘুম পায়
-      ‘সে তো পাবেই মা !সারাদিন যা খাটুনি যায় তোর’

দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে মা ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়ে আবার ক্লান্ত চোখ দুটো বুজে আসে। মাধু আর দেরি করে না। আঁতুড় ঘর থেকে বেরিয়ে দরজাটা আলতো করে ভেজিয়ে রেখে রান্নাঘরে আসে। সব রান্না গুছিয়ে রেখে ঘরটা পরিষ্কার করে শোবার ঘরে ঢোকে বোন তিনটে মেঝেতে শুয়ে আছে একটার ওপর আর একটা। তাতেই ঘুমোচ্ছে ওরা পরম শান্তিতে। বাবা বাড়ি নেই, কোথায় গেছে তাও জানে না মাধু জানার কথাও নয়। বাবার সাথে বাক্যালাপ হয় কদাচিৎ মাধুও শুয়ে পড়ে বোনদের পাশে একটা কোণেবাবা না থাকলেও খাটে শোয়ার অধিকার নেই কারো। মায়ের কোলের বোনটার কথা ভাবতে ভাবতেই কখন যেন ঘুমিয়ে পড়ে একসময় । 

আগের অথবা পরের দিনের পুনরাবৃতি স্বরূপ কেটে যায় আরও পনেরোটা দিন। কোলের বোনটা একটু একটু করে মানুষের মত হয়ে উঠছে চোখের সামনে। রাত বারোটা বাজতে গেল প্রায় বোন তিনটে মেঝেতে ঘুমোচ্ছে অকাতরে খাটের পাশের চিলতে গলিটায় মা শুয়ে আছে কোলের বোনটাকে নিয়ে খাটের বিস্তৃত স্থান জুড়ে বাবার অবস্থান জানান দিয়ে যায় গম্ভীর নাসিকাগর্জন। মেঝের একটা কোণে বইপত্র নিয়ে বসেছে মাধু। হ্যারিকেনের আলো জ্বলছে টিমটিম করে চোখটা ভাল করে রগরে নেয় মাধু আপ্রাণ চেষ্টা চালায় ঘুমটা কাটিয়ে ফেলার। ইতিহাস বইয়ের লাইনগুলো যেন লাফ দিয়ে একটার ওপর আর একটা উঠে পড়তে চায় প্রাণপণে লাইনগুলোকে বাগে পেতে চেষ্টা করে মাধু, তবু ঢুলে পড়ে বইয়ের ওপরেই। হঠাৎ স্পর্শের উষ্ণতা অনুভুত হয় শরীরে। চমকে তাকায় মাধু কখন যেন মা এসে বসেছে পাশে
-      ‘ঘুম পেয়ে গেছে মাধু ? উঠে পড় তাহলে কাল খুব ভোর ভোর ডেকে দেব খন
-      ‘আর একটু পড়ে নিই মা, নাহলে সময় হবে না কাল’
-      ‘আচ্ছা বেশ, পড়ে নে তাহলে একটু। এই আমি বসে রয়েছি পাটায়’

মাধু আবার পড়তে শুরু করে গুনগুন করে। খুব বেশি জোরে আওয়াজ করা যায় না। বাবার আফিমের ঘুম ভেঙে গেলে বড্ড রাগ করে অদ্ভুত কান্ড! মা এসে পাশটায় বসাতেই ঘুম যেন ছুট মেরেছে উল্টোদিকে আরো ঘন্টাখানেক পড়া হলে উঠে পড়ে মাধু কোলের বোনটার পাশে মা, আর মায়ের পাশে মাধু, শুয়ে পড়ে তিনজন খাটের পাশের ঐ চিলতে গলিটায়

মায়ের ডাকে ধরমর করে উঠে বসে মাধু – “ওঠ রে মাধু, পড়তে বসবি না ?’ ঘুম ভাঙা চোখ মেলে তাকায় মাধু বাইরের প্রকৃতির দিকে। আকাশ ফরসা হয়ে এসেছে, পাখিদের কিচির মিচির ভেসে আসছে লাগোয়া আমবাগান থেকে। উঠে পড়ে মাধু, দরজা খুলে বাইরে এসে হাত মুখ ধুয়ে নেয়। মা ততক্ষণে উনুনে আগুন দিয়ে দিয়েছে ঠাকমার ঘর থেকে ঝাঁটার খচাখচ শব্দ ভেসে আসছে ক্রমাগত মাধু বইপত্র নিয়ে উঠোনে আসে মায়ের রান্নাঘরের দরজার সামনেটাতেই বসে পড়ে পিড়ি পেতে পড়া ভালই তৈরি আছে মাধুর তবু একবার ঝালিয়ে নেয় প্রথম থেকে। ঘন্টা তিনেক একটানা পড়ে বইপত্র গুছিয়ে নিয়ে উঠে পড়ে পুকুরপাড় থেকে ঘুরে এসে মাধু দেখে বাবা খেতে বসেছেন, আর মা খাবার পরিবেশন করছে। ঠাকমা তফাতে বসে রয়েছে তদারকিতে। পরিচিত চিত্র মাধু ঘরে ঢুকে জামাকাপড় পড়ে তৈরি হয়ে নেয় আস্তে আস্তে। অপেক্ষা করে বাবার বেরিয়ে যাওয়ার বাবা বেরিয়ে গেলে একছুটে রান্নাঘরে আসে মাধু তাড়াতাড়ি করে বেড়ে রাখা ভাত গোগ্রাসে গিলে মা’কে প্রণাম করে ইস্কুলের দিকে রওনা হয়

পরীক্ষার দিন শেষ হয়ে যায় ক্রমশ আরো কিছুদিনের তফাতে ফলাফল – মাধু প্রথম হয় সপ্তম শ্রেনিতে ওঠার পরীক্ষায় মায়ের হাসিমুখ আর জলে ভরা চোখ, বাবার তাচ্ছিল্য আর অবজ্ঞা নিয়ে শুরু হয় নতুন ক্লাস নতুন ক্লাস তবু নতুন বই নয় আগের বছরের পাশ করে যাওয়া মেয়েদের থেকে বই সংগ্রহ করে রাখে ইস্কুলের দিদিমণিরাই ইস্কুলের দুঃস্থ ছাত্রীদের জন্য। মাধুও পেয়ে যায় সেই বই। পুরনো বইয়ের ‘নতুন গন্ধ’প্রানভরে নেয় মাধু পুরনো কাগজের দিস্তা দিয়ে যত্ন করে মলাট দেয় বইতে, গোটা গোটা অক্ষরে লিখে রাখে নাম, বিষয়, শ্রেনি, শাখা পাতা উল্টেপাল্টে দেখতে ভারি ভাল লাগে মাধুর ইতিহাস বইয়ের প্রথম অধ্যায়টা পড়েও ফেলে গল্পের ছলে মাধুর বন্ধু নীলা-পাশ করতে পারে নি পরীক্ষায় নীলা পড়াশোনা করতে ভালবাসেনা একটুও তবু ওর বাবা জোর করে ইস্কুলে পাঠায় মেয়েকেমাধু অবাক হয়ে ভাবে, পড়া তো কত সুন্দর জিনিষ, কত কিছু জানা যায়, কত কিছু শেখা যায়। নীলার পড়তে ভাল লাগে না কেন! মাধুর তো মনে হয়, যদি ওকে কেউ আর কোন কাজ করতে না বলে, তবে ও সারাদিন-সারারাত শুধু পড়েই কাটিয়ে দিতে পারে পড়ার আনন্দ আর কোন কিছুতেই তো নেই! নীলার বাবা বলে ‘শিক্ষাই মুক্তি’এ কথার মানে মাধু বুঝতে পারে না সেভাবে তবু মনে হয়, নীলার বাবার মত একটা বাবা যদি থাকত মাধুর! কি মজাই না হত! তবু মাধুর দুঃখ নেই, মা আছে ওর পাশে সবসময়। বুঝতে পারে মাধু, কত কষ্ট স্বীকার করে, কত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে থেকেও মা ইস্কুলে পাঠায় মাধুকে। মায়ের স্বপ্নের আঁচও অনুভব করে মাধু। অনেক বড় হতে হবে, দশজনের মধ্যে একজন হতে হবে মাধুকে, মায়ের সমস্ত আশা-ভরসা মাধুকেন্দ্রিক অথচ, মায়ের স্বপ্নপূরণের সঠিক পথ মাধুর কাছে কুয়াশামাখা-স্বচ্ছতাবিহীন ঠিক কতটা করতে পারলে মায়ের স্বপ্ন সত্যি হবে, বোঝে না সে। দশম শ্রেনির পর জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। প্রথমে সেই পরীক্ষায় সফল হতে হবে এইটুকুই বোঝে মাধু তার পরের সময়টার আর কোন দিশা জানা নেই তার দশজনের মধ্যে একজন হওয়ার অর্থ খুঁজে পায়না মাধু তবু অপেক্ষা নতুন দিনের,নতুন সময়ের, নতুন পরীক্ষার আর নতুন জীবনের

                                                      [ আগামী সংখ্যায় সমাপ্য ]